বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াত চক্রের হোতা সন্দেহে রাজধানীর গুলশান থেকে আটক পোল্যান্ডের নাগরিক পিটার শজেপ্যান মাজুরেক জানিয়েছেন, তার সঙ্গে আটক সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার সহায়তায়ই এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন পিটার।
তিনি বলেন, পোল্যান্ডের এই নাগরিক ম্যান পাওয়ার বিজনেসের (জনশক্তি ব্যবসা) ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু তার উদ্দেশ্য ছিল এখানে এসে প্রতারণা করা। আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, বাংলাদেশের আগে তিনি বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশে জালিয়াতির মাধ্যমে এভাবে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
মনিরুল ইসলাম জানান, সিটি ব্যাংকের এই তিন কর্মকর্তা এটিএম কার্ড (ডেবিট কার্ড) ডিভিশনের কর্মী। এদের সহায়তায় এর আগেও বিদেশি কয়েকজনের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করেন পিটার। বাংলাদেশিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আত্মসাৎ করতে গিয়েই ধরা পড়লেন তারা।
ডিএমপির এ অতিরিক্ত কমিশনার জানান, পিটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমেই তিনি মাকসুদের নাম বলেন। তাকে আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে মাকসুদ দু’জনের নাম বলেন। সে দু’জন হলেন রেজাউল করিম ওরফে শাহীন এবং রেফাত আহমেদ ওরফে রনি।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকেই রিমান্ডে নেওয়া হবে উল্লেখ করে মনিরুল ইসলাম জানান, এই চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত আছে। এরমধ্যে দু’জন দেশের বাইরে চলে গেছে। রয়েছেন একজন প্রবাসী বাংলাদেশিও। তাদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আরও তদন্ত করা হবে।
এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় এ চারজনসহ মোট পাঁচজনকে আটক করা হলো। এর আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে এক বিদেশিকে আটক করা হয়। পরিচয় জানানো না হলেও তিনি পূর্ব ইউরোপের একটি দেশের নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, বনানীতে অবস্থিত একটি এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ দেখে পূর্ব ইউরোপের দেশটির ওই নাগরিককে শনাক্ত করা হয়। আটক ওই ব্যক্তির কাছে একাধিক দেশের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়।
গত ৬ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রাজধানীর ইস্টার্ন, সিটি ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চার বুথে ‘স্কিমিং ডিভাইস’ বসিয়ে কার্ডের তথ্য চুরি ও পরবর্তী সময়ে কার্ড ক্লোন করে গ্রাহকদের অজান্তে টাকা তুলে নেওয়া হয়। বিষয়টি ১২ ফেব্রুয়ারি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় বনানী থানায় ইউসিবি এবং পল্লবী থানায় সিটি ব্যাংক আলাদা দু’টি মামলা করে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, জালিয়াতির ঘটনায় ৪টি ব্যাংকের ৪০ জন গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের হিসাব থেকে প্রায় ২১ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
Discussion about this post