কক্সবাজার প্রতিনিধি: সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান বলেছেন, আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬০ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। আজ ১১ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি সব কিছু ঊর্ধ্বে রেখে একটি নিরপেক্ষ এবং প্রকৃত ঘটনার মূল তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে বলেই সবাই বিশ্বাস রাখতে পারেন।
আজ রবিবার (১৬ আগস্ট) কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জের কার্যালয়ে গণশুনানি শেষে মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন। সকাল ১০টার কিছু সময় পর সেখানে গণশুনানি শুরু হয়। এ সময় তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেন।
সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ নিহত হওয়ার ঘটনায় গঠিত সরকারি তদন্ত কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলীসহ তদন্ত কমিটির সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
সিনহা রাশেদ নিহতের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত হয় এ তদন্ত কমিটি। এ কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান। সদস্য হিসেবে আছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জাকির হোসেন, মোহা. শাজাহান আলী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধি সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ।
এ কমিটিকে প্রথমে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কথা বলা হয়। পরে কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সময় আরও ৭ দিন বাড়ানো হয়।
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে। আর রামু থানায় একটি মামলা করা হয়।
পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক।
এর মধ্যে রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া পুলিশের চার সদস্য এবং এ ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষীকে গত শুক্রবার থেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। যাদের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে তারা হলেন- এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের দায়ের করা মামলার সাক্ষী নুরুল আমিন, নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ।
Discussion about this post