সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট সংশোধন করে দেওয়ানি আদালতের বিচারকদের আর্থিক এখতিয়ার বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা।
আইনজীবীদের অভিযোগ, ইতিপূর্বে এই আইন সংশোধন করে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বিচারকদের যেভাবে আর্থিক এখতিয়ার বৃদ্ধি করা হয়েছে এবার তা হয়েছে লাগামহীনভাবে। কারণ একবারেই ৫ লাখের পরিবর্তে ৫ কোটি টাকা মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তির যে এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে তা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও অবাস্তব।
অবিলম্বে বিষয়টি বিচেনায় নিয়ে পুনরায় আইনে সংশোধনী আনার জন্য আইনমন্ত্রীর প্রতি দাবি জানান আইনজীবীরা। সভায় উপস্থিত আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন।
বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আইনটি সংশোধনীর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা যুক্তি তুলে ধরেছেন। এক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের আইনজীবীরাও স্টেকহোল্ডার। বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে। তিনি বলেন, যে বিষয়টি বেশি লক্ষণীয় তা হচ্ছে, এখন এই মূল্যমানের মামলাগুলো শুনানি ও নিষ্পত্তি করবেন দু’জন বিচারপতি। জেলা জজ আদালতে ফেরত গেলে তা শুনবেন একজন বিচারক। এর আগেও এই আইনের সংশোধনীর সময় বিচারিক এখতিয়ার বেড়েছে, কিন্তু এবার যে হারে বেড়েছে, অতীতে সেই হারে বাড়েনি। আবার এটাও দেখতে হবে জমির দাম অনেক বেশি বেড়ে গেছে। সব কিছুর সমন্বয় করে একটি সমাধান করা হবে।
সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট-১৮৮৭ সংশোধন করে গত ১২ মে গেজেট জারি করে সরকার। সংশোধিত আইন অনুযায়ী এখন একজন সহকারী জজ ২ লাখের পরিবর্তে ১৫ লাখ, সিনিয়র সহকারী জজ ৪ লাখের পরিবর্তে ২৫ লাখ এবং জেলা জজ ৫ লাখের পরিবর্তে ৫ কোটি টাকা মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবেন। ফলে ৫ লাখের ওপর থেকে ৫ কোটি টাকা মূল্যমানের যেসব দেওয়ানি মামলায় হাইকোর্টে আপিল হয়েছে, সেগুলো নিম্ন আদালতে ফেরত যাওয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে তিনটি রিট আবেদন দায়ের হয়েছে। সোমবার এসব আবেদনের ওপর শুনানি করে সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট সংশোধন করে দেওয়ানি আদালতের বিচারকদের আর্থিক এখতিয়ার বৃদ্ধির ফলে হাইকোর্টের বিচারাধীন আপিল মামলাসমুহ বিচারিক আদালতে পাঠানোর বিধান কেন বে-আইনি ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
Discussion about this post