প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে গৃহবন্দী, আইনের শাসনের প্রতি হস্তক্ষেপ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার জন্য মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
আজ রোববার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বার ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকের সংকট হলো সংবিধান অনুসারে বিচার বিভাগর স্বাধীনতা থাকবে কি থাকবে না। একটি রায়কে কেন্দ্র করে, যেহেতু এ রায় সরকার পছন্দ করেনি, আজকে সেই রায়ের প্রতিক্রিয়া হিসেবে সরকার ও সরকারি দলের নেতারা যে আচরণ করেছেন তা নজিরবিহীন।
‘কোনো সভ্য দেশে, কোনো গণতান্ত্রিক দেশে, কোনোদিন শুনিনি যে, প্রধান বিচারপতিকে গৃহবন্দি করেছেন প্রথমে। এখনো তিনি সম্পূর্ণভাবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছেন। সরকারের অনুমোদন ছাড়া কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। অর্থাৎ তাদের কি বোঝা যায় তিনি শুধু নজর বন্দি না। তিনি তাদের অধীনে তাদের কাষ্টডিতে সরকারের হেফাজতে এখন আছেন।
মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাদের আইনজীবী নেতারা তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। দেশের সাংবাদিকরা দেখা করতে পারেন না। তার আত্মীয়-স্বজনেরা এখনো তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি’।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন অভিযোগ করে বলেন, ‘আপনাদের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ওপরে হামলা এসেছে। এ হামলা নগ্ন হামলা, এটি আওয়ামী হামলা। ছুটির আগে আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা সরকারের পক্ষ থেকে বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি আপনি যদি রায় বাতিল না করেন, বন্ধের পরে আপনাকে আর বসতে দেওয়া হবে না। এরই প্রতিফলন হিসেবে জোর করে প্রধান বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে’।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘এখন শুনছি, তাকে জোর করে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ১৯৮২ সালে এভাবে কামাল উদ্দিন হোসেনকে বরখাস্ত করেছিল সরকার। আইনজীবীরা আন্দোলন করেছিলেন। আন্দোলন কখনো বৃথা যায়নি। আমাদের আন্দোলনেও সফলতা আসবে’।
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে দেশের সকল আইনজীবী সমিতিতে পাঁচ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। কর্মসূচির মধ্যে আজ রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সব জেলা বারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
Discussion about this post