ছাত্রীকে একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি প্রদান ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ার অপরাধে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার শিক্ষক রাজীব মীরের বিরুদ্ধে তৃতীয় দফায় আবারো যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। বিভাগের স্নাতক পর্যায়ের দুই ছাত্রী তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার উপাচার্যের দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অভিযোগ পাওয়ার বিষটি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা দুজন শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এর সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও বিষয়টি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলে প্রেরণ করা হচ্ছে।’
এর আগে রাজীব মীরের বিরুদ্ধে আরও দুই ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। সোমবার হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেলে মুখোমুখি হয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রমাণাদিও দেন তারা।
এদিকে গত ৫ এপ্রিল বিভাগের মাস্টার্সের আরেক ছাত্রী রাজীব মীরের বিরুদ্ধে একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেন উপাচার্যের কাছে। অভিযোগের স্বপক্ষে মুঠোফোন রেকর্ডও জমা দিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। অন্যদিকে বিভাগের স্নাতক পর্যায়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীও রাজীব মীরের বিরুদ্ধে একাডেমিক নিরাপত্তা চেয়ে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করে।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে গত ১১ এপ্রিল রাজীব মীরকে সাময়িক অব্যহতি দিয়েছিল মাস্টার্সের ক্লাস থেকে। পরবর্তীতে ওই তদন্ত কমিটি রাজীব মীর, বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের বক্তব্য গ্রহণ করে। প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করে কমিটির প্রতিবেদনে রাজীব মীরের অপরাধ প্রমাণিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজীব মীরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১তম সিন্ডিকেট সভায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তবে রাজীব মীরের স্থায়ী অপসারণ চেয়ে দুটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে একাধিক দিন বিক্ষোভ করেছে। এর আগে, ২০১৪ সালেও বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজীব মীরের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়া ও জঙ্গিবাদের মদদ দেয়ার অভিযোগ এনে তার স্থায়ী অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন করেছিল কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী।
ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয়ায় ২০০৪ সালে পূর্বতন কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে রাজীব মীরকে আটকে রেখেছিল ছাত্রীরা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের একাধিক অভিযোগ ওঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
Discussion about this post