নোয়াখালীতে প্রায় দুই কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি মামলায় সোনালী ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান শহরের মাইজদী কোর্ট এলাকা থেকে গতকাল সোমবার দুপুরে তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। পরে বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার কর্মকর্তারা হলেন সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ প্রিন্সিপাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মীর আবদুল লতিফ, প্রধান কার্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার মো. সামছুদ্দোহা নাহাদ, সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা শাখার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জাকের উল্যাহ্, ফেনী সদর উপজেলা কমপ্লেক্স শাখার এজিও গ্রেড-২ (ক্যাশ) এম এ রহমান এবং সুবর্ণচর শাখার এসপিও ও ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাক আহমেদ ছিদ্দিকি।
দুদক জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে নিজাম উদ্দিন ফারুক নামের এক ব্যবসায়ী তাঁর ডলফিন সি-ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ব্যবসার জন্য সোনালী ব্যাংকের মাইজদী কোর্ট শাখা থেকে ১ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকার চলতি মূলধন ঋণ নেন। ঋণ নেওয়ার পর ওই ব্যক্তি নির্দিষ্ট খাতে ঋণের টাকা বিনিয়োগ না করে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে ব্যাংকের চার কর্মকর্তার যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন। পরে ওই টাকা দিয়ে ঋণগ্রহীতা একটি ফিলিং স্টেশন ও একটি ফ্ল্যাট কেনেন।
অন্যদিকে মো. সামছুদ্দোহা নাহাদ সরেজমিনে পরিদর্শন না করে গ্রাহকের ঋণ প্রস্তাবটি প্রধান কার্যালয়ে বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় চলতি মূলধনের গুদাম সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে গ্রাহক দুই কোটি টাকা ঋণ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও তিনি তাঁর ঋণ মঞ্জুরে ভূমিকা পালন করেন এবং গ্রাহককে উল্লিখিত অর্থ আত্মসাতে সহায়তা করেন।
দুদক সূত্র জানায়, এই অনিয়মের বিষয়টি জানার পর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সালে দুদকে একটি মামলা করে। দুদকের নোয়াখালী কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তে ঋণগ্রহীতা ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ পাওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে ঋণগ্রহীতা নিজাম উদ্দিন উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নেওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সোনালী ব্যাংকের চার কর্মকর্তা, এক প্রকৌশলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মশিউর রহমান। তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংকের প্রায় দুই কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Discussion about this post