বিয়ে একটি পারিবারিক বন্ধন। এই বন্ধনকে জোড়ালো করতে দুই হাত এক করে নেয়া হয় সারা জীবন একসঙ্গে থাকার পণ। কিন্তু এই সংসার জীবন সবসময় সুখকর হয় না। কখনো কখনো এই সুখের সংসারে নেমে আসে তিক্ততার ছায়া। আর তখনই আসে তালাকের প্রশ্ন।
তালাক কী ?
বর্তমান সময়ে বিয়ে বিচ্ছেদের হার অনেক বেশি। কিন্তু অনেকের এ বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকায় তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটানোর সময় বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে তাদের দেনমোহর ও ভরণ-পোষণ থেকে বঞ্চিত করা হয়। মুসলিম পারিবারিক আইনে বিয়ের মাধ্যমে স্থাপিত সম্পর্ককে আইনগত উপায়ে ভেঙে দেওয়াকে তালাক বা বিয়ে বিচ্ছেদ বলে।
কাবিননামার ১৮ নং কলামে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে বিয়ে বিচ্ছেদের ক্ষমতা দেয়াকে তালাক-ই-তৌফিজ বলে। এই তালাক-ই-তৌফিজ এর ক্ষমতা দেয়া থাকলে স্ত্রী আদালতের আশ্রয় ছাড়াই স্বামীকে তালাক দিতে পারেন। এছাড়া কোনো নারীর স্বামী দীর্ঘদিন যাবত নিখোঁজ থাকলে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারবেন।
এক্ষেত্রে স্বামীর মতোই স্ত্রী তালাকের নোটিশ চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবেন। নোটিশ প্রাপ্তির ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে।
নিম্নে লিখিত যেকোন উপায়ে একজন স্ত্রী তালাক সম্পন্ন করতে পারেন।
আদালত
একজন স্ত্রী আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন।
কাবিননামার ১৮ নং কলামে
কাবিন নামার ১৮ নং কলামে বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয়টি উল্লেখ থাকলে, একজন স্ত্রী কারণবশতঃ বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারেন।
স্বামী-স্ত্রী সিদ্ধান্ত
স্বামী স্ত্রী যদি সিদ্ধান্ত নেন যে তারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাবেন। তবে তারা শান্তিপূর্ণভাবে বিবাবহ বিচ্ছেদ ঘটোতে পারেন।
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী একজন স্ত্রী যেসব কারণে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারেন।
স্বামী নিখোঁজ থাকলে
যদি চার বছর যাবৎ স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে বা কোন খোঁজ খবর না নিলে ও ২ বছর যাবৎ স্ত্রীর খোরপোষ প্রদানে অবহেলা বা ব্যর্থ হলে একজন নারী বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারনেবন।
একাধিক বিয়ে
কোনো স্বামী যদি স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া একাধিক বিবাহ বন্ধনে অবদ্ধ হয় তবে স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারবে।
৭ বছর কারাদণ্ড
কোনা অপরাধ সংঘটনের কারণে স্বামী ৭ বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে একজন স্ত্রী তালাকের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
Discussion about this post