খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার একটি মৎস্য ঘেরের কর্মচারী আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে খোকন মোড়ল হত্যার অভিযোগে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৯ জনের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা আনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বায়লা হারানিয়া গ্রামের মৃত ছোরমান গাজীর ছেলে কামরুল গাজী (৩৪), মৃত কফিল উদ্দিন সানার ছেলে জুলফিকার ওরফে ফাকু (২৮), পাইকগাছা উপজেলার মৌখালী গ্রামের বাবর আলী সানা ওরফে বাবু সানার ছেলে হুমায়ূন সানা (৩২), কয়রা উপজেলার অর্জুনপুর গ্রামের জব্বার মোড়লের ছেলে সালাম ওরফে ছাকিম মোড়ল (৪০), একই উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের অজেদ সানার ছেলে বায়েজিদ সানা (৩৭), একই গ্রামের আমজাদ সানার ছেলে আলমগীর সানা (৩২), মৃত মাজেদ সানার ছেলে রুস্তম সানা (৩৪), মৃত নুর আলী সানার ছেলে হবি সানা (৩৮) ও অহেদ আলী সানার ছেলে মফিজুল ওরফে মফি সানা (৩৮)।
মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে খুলনার জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস এম সোলায়মান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই আসামির কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি আরিফ মাহমুদ লিটন জানান, কয়রা উপজেলার শেওড়া ও শ্রীফলতলা মৌজায় আলহাজ মো. মজিদ সানার মৎস্য ঘেরের কর্মচারী হিসেবে নৈশপ্রহরীর কাজ করতেন সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার একসরা গ্রামের আবু বকর সিদ্দিক ওরফে খোকন মোড়ল। এ মৎস্য ঘের থেকে প্রায়ই মাছ চুরি করতো দণ্ডপ্রাপ্তরা।
মাছ চুরির কথা ঘের মালিককে বলে দিতে পারে এ আশঙ্কা থেকে ২০০৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নৈশ প্রহরী খোকন মোড়লকে হত্যা করা হয়। পরদিন মৎস্য ঘেরের পাশে বাসিয়া গ্রামের কলাপোতা বিলের বাজারিয়া খাল থেকে খোকন মোড়লের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত খোকন মোড়লের স্ত্রী মোছা. গুলনাহার বিবি বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে কয়রা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা কয়রা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আলহাজ উদ্দিন প্রথমে সালাম ওরফে ছাকিমকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর ছাকিম নিজের দোষ ও অন্যান্য জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ছাকিমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০০৭ সালের ৩১ মে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। মামলায় ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষী গ্রহণ করেন আদালত।
Discussion about this post