সাঈদ চৌধুরী: হাইওয়েতে থেমে থাকা গাড়ির কারণে সড়ক দূর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়ে। দূর থেকে অনেক সময়ই বোঝা যায় না সামনের গাড়িটি কি চলমান নাকি স্থির। এই সমস্যাটি দ্রুতগতির যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রবল। একই সাথে কয়েকটি দিকে চোখ রাখতে গিয়ে চলক দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। লুকিং গ্লাসে পেছনের গাড়ির গতি বোঝার চেষ্টা এবং সামনের গাড়িকে সঠিকভাবে ওভারটেক করার সময় যদি কোন থেমে থাকা গাড়ি সামনে থাকে তখন চালক বিভ্রান্ত হয়। চোখের নুণ্যতম দৃষ্টি ক্ষমতা ও তড়িৎ দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার প্রয়াসই দুর্ঘটনা আরও বেশী করে ঘটানোর সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে। গত কিছু দিনে ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়ক অনেকগুলো প্রাণ ঝড়ে গিয়েছে রাস্তার ধারে থেমে থাকা গাড়ির কারণে। কখনও কখনও এমনও দেখা যায় রাস্তার পাশের দিকে ফুটপাতের কাছাকাছি বাজার তৈরী করা হয়েছে এবং বাজারের অংশ বাদ দিয়ে বাড়তি জায়গায় গাড়ি পার্কিং করা হয়েছে। বাকী যেটুকু জায়গা অবশিষ্ট আছে সেখান দিয়ে একটি গাড়িও সঠিকভাবে যাতায়াত করতে পারবে কিনা সন্দেহ। গতিশীল গাড়ি একটি গাড়িকে অতিক্রম করার সময় কয়েক সেকেন্ডর দৃষ্টি পার্থক্যের কারণে ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা এবং বার বারই তার প্রমাণ হয়ে থেকে যাচ্ছে রাস্তার মানুষের প্রতিদিনকার মৃত্যুগুলো!
তিনটি উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে এই জাতীয় সড়ক দূর্ঘটনাগুলোর পেছনে। সাধারণত অনেক কোম্পানিই তাদের গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় নিজস্ব গাড়িগুলো রেখে দিয়ে পণ্য পরিবহনের গাড়িগুলো রাস্তার উপর পার্কিং করে রাখে। দুই হচ্ছে রাস্তার উপর দেধার্চে বাজার কার্যক্রম এবং তিন হচ্ছে বিভিন্ন দালান তৈরী ও স মিলের কাঠের অভয়ারণ্য এই রাস্তা!
এত সবের পর রাস্তার মূল স্থানটুকু হয়ে পড়ে পার্কিংয়ের জায়গা আর যেটুকু বাকী থাকে তা হয় রাস্তা পারাপার ও যান চলাচলের সরু পথ । তখন রাস্তা পারাপারে যেমন দুর্ঘটনা ঘটে তেমনি ঘটে দ্রুত গতির যান নিয়ন্ত্রনে রাখতে না পারা।
গাজীপুর ও শ্রীপুরে হাইওয়ে পুলিশ প্রশাসন যথেষ্ট উদ্যোগী হলেও কিছু কিছু মানুষের অনিয়ম তান্ত্রিক ও আইন মোতাবেক না চলার কারণে এমন দুর্ঘটনাগুলো থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারছিনা।
থেমে থাকা গাড়ি, বাজার, বিভিন্ন দোকান ও স্টোরের মালামাল রাস্তার উপর থেকে তুলে নেওয়ার জন্য এক্ষনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক। সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের জন্য শুধু চালকের অনভিজ্ঞতাকেই দায়ী না করে বরং সড়কগুলোর সঠিক ব্যবহার করার উপযোগী করে তোলাটাও গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি যোগাযোগ মন্ত্রনালয় সহ হাইওয়ে প্রশাসন দ্রুত এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
লেখক: সদস্য, উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি শ্রীপুর, গাজীপুর।
Discussion about this post