নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘুষ নেয়া ও তথ্য পাচারের অভিযোগে বরখাস্তকৃত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদনটি ফেরতের আদেশ দেন।
আদালতে এনামুল বাছিরের পক্ষে শুনানি করেন- ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। দুদকের পক্ষে ছিলেন- অ্যাডভোটেক খুরশিদ আলম খান।
নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আবেদন করেন এনামুল বাছির।
এরআগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে সোমবার (২২ জুলাই) রাতে গ্রেফতার করা হয়। তার আইনজীবী কামাল হোসেন জানান, রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে দারুসসালামের লালকুঠি এলাকার তার এক আত্মীয়ের বাসা থেকে বাছিরকে গ্রেফতার করে দুদক।
তার আগে, ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা ঢাকার এক নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ডিআইজি মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পর দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই ডিআইজি মিজান ও এনামুল বাছিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে দুদকের পরিচালক এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাক ঘুষ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ডিআইজি মিজান। অভিযোগটি অস্বীকার করে বাছির দাবি করেন, তার কণ্ঠ নকল করে ডিআইজি মিজান কিছু ‘বানোয়াট’ রেকর্ড একটি টেলিভিশনকে সরবরাহ করেছেন।
অভিযোগ ওঠার পর গত ১২ জুন বাছিরকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে ফানাফিল্যাকে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। এর আগে ২১ জুলাই পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখান ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
১০ জুন দুদকের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কমিশনের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে পরিচালিত একটি অনুসন্ধান হতে তাকে দায়মুক্তি দিতে তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণে সমঝোতা করেন।
তিনি ৪০ লাখ টাকার মধ্যে ২৫ লাখ টাকা ঢাকার রমনা পার্কে বাজারের ব্যাগে করে ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে গ্রহণ করেন এবং অবশিষ্ট ১৫ লাখ টাকা পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে পাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। ছেলেকে স্কুলে আনা-নেওয়ার জন্য তিনি গ্যাসচালিত একটি গাড়ি দাবি করেন। এছাড়া তিনি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবৈধভাবে পাচার করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এটিএন নিউজে প্রচারিত এই প্রতিবেদনটি কমিশন আমলে নিয়ে দুদক সচিব মো. দিলওয়ার বখত এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে কমিশন, দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গ সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে পরিচালক খন্দকার এনামুল বাসিরকে দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকরি হতে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে।
Discussion about this post