বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনদের ক্ষতিপূরণের টাকার লোভে একটি চক্র নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে হাইকোর্টের রিট জালিয়াতি করে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়, বর্তমান সময়ে সরকার উল্লেখিত জায়গায় বিভিন্ন স্থানে অবকাঠামো উন্নয়নে জমি অধিগ্রহণ শুরু করা হয়। এই সুযোগে সম্প্রতি দক্ষিণ হালিশহর এলাকার মৃত আবদুস সামাদের ছেলে আবদুল মান্নান হাইকোর্টে অন্য এলাকার রিট পিটিশনের নম্বর উল্লেখ করে (এলএ মামলা নম্বর ৯/১৫-১৬) চলতি বছরের ২৯ জুনের ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা সম্বলিত আইনজীবীর সার্টিফিকেট ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এলএ শাখায় জমা দেয়। এখানে রিট পিটিশনের নম্বর উল্লেখ করা হয় ৮৯৫২/১৬।
সরকারের অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা দেয়া বন্ধ করার জন্য আব্দুল মান্নান এই প্রতারণার আশ্রয় নেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই রিট নম্বর লক্ষীপুরের কাজিরহাট উপকূল কলেজ সংক্রান্ত। এখানে বিস্ময় হওয়ার মতো তোঘলকি কাণ্ড ঘটায় ওই প্রতারক চক্র। যে সময় চট্টগ্রাম এলএ শাখায় ওই রিটের নম্বর উল্লেখ করা হয় তখন কাজিরহাট উপকূল কলেজ সংক্রান্তে হাইকোর্টে ওই রিটই দাখিল হয়নি।
মূলত ওই চক্র জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা বন্ধ করে নিজেদের আধিপত্য সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে বিষয়টি জমির মূল মালিকরা এলএ শাখাসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর অবহিত করেন।
এদিকে ওইসব এলাকার এলএ নম্বর ৭/১৩-১৪ এবং ৮/১৩-১৪ মামলায় হাইকোর্টে মোট ৫টি রিট পিটিশন দাখিল হয়। তবে ৯১৩৬/১৪ রিটটি আবদুল মান্নানের সহোদর আবু সালেহসহ আরও বিবাদিরা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সহযোগী ইকবাল হোসেন হাইকোর্টে আরও একটি রিট ১২৭৩৫/১৫ দায়ের করেন। অপর ৩টি পিটিশনের মধ্যে মো. রকিবুল হাসান গং ১১০৯১/১৪ ও শেখ খোরশেদ আনোয়ার গং ৮৩১০/১৬ দাখিল করেন। এদিকে আবদুল মান্নান গং ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ১২৩৮৪/১৪ রিট দায়ের করে।
এ ৪টি রিট পিটিশনের মধ্যে দুটির বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ আপিল করে। এগুলো হচ্ছে মো. রকিবুল হাসান গং (১১০৯১/১৪) ও শেখ খোরশেদ আনোয়ার গংয়ের (৮৩১০/১৬) রিট মামলা। কিন্তু বাকি দুটি রিটের বিরুদ্ধে আপিল থেকে বিরত থাকে সরকার পক্ষ।
জমির মালিকানা দাবিদারদের রিটের বিরুদ্ধে আপিল হলেও আবদুল মান্নান গং ও তার সহযোগী হিসেবে পরিচিত ইকবাল হোসেনের দায়েরকৃত রিটের বিরুদ্ধে কেন আপিল হয়নি তা নিয়েও রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
এলাকার আদি বাসিন্দা এয়াকুব আলী, মো. জুবায়ের আহমেদ, আসিফুর রহমান জীবনসহ অনেকেই আবদুল মান্নানের শাস্তি দাবি করেন। তারা এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন যাতে আর হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Discussion about this post