ডেস্ক রিপোর্ট
সাতক্ষীরায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হাজতখানায় বাবলু সরদার (৫৬) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ বলছে, তিনি গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে মৃতের স্বজনদের দাবি, বাবলুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতের কোনো এক সময় বাবলু সরদার সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসের মধ্যে অবস্থিত ডিবি পুলিশের হাজতখানায় মারা যান। এ ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শেখ সোহেল ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
বাবলু সরদারের বাড়ি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে। তাঁর বাবা মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা জুড়ন সরদার।
সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন আলম চৌধুরীর ভাষ্য, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বাবলু সরদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৪৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় তাঁকে আটক করা হয়। পরে বিকেলে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে সাতক্ষীরা ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। রাতে তাঁকে হাজতখানায় রাখা হয়। রাতের কোনো এক সময় কোমরে থাকা রশি দিয়ে তিনি হাজতখানার জানালায় ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন।
তবে বাবলুর মেয়ে সুলতানা মুন্নির দাবি, গতকাল সকাল ১০টার দিকে একজন নারী তাঁদের বাড়িতে আসেন। ওই নারী তাঁর বাবা বাবলু সরদারের সঙ্গে ঘরে ঢুকে দেখা করেন। পরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে চার থেকে পাঁচজন তাঁর বাবার ঘর থেকে ৪৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার এবং তাঁর বাবাকে আটক করেন।
এ সময় তাঁর বাবাকে মারধর করা হয়। তাঁর বাবাকে যখন আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। নির্যাতনের কারণে তাঁর বাবার মৃত্যু হয়েছে। মুন্নির দাবি, তাঁর বাবার কাছে আসা ওই নারীই ঘরে ফেনসিডিল রেখে গিয়েছিলেন।
বাবলুর স্ত্রী সাহানারা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী আত্মহত্যা করতে পারেন না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ওবায়দুল্লাহ বলেন, বাবলু সরদারকে আটক করার পর ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। আসামিকে তাঁদের হেফাজতে রাখার জন্য সাতক্ষীরা ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে যান।
সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন আলম চৌধুরী বলেন, গতকাল বেলা ১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আক্তার হোসেন ও চিকিৎসক জয়ন্ত সরকারের উপস্থিতিতে বাবলু সরদারের মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
Discussion about this post