জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগে প্রশাসনের দায়ের করা মামলায় হাজিরা দিতে ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছেন ৫৪ শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে তারা আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছান। সকাল দশটায় মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা।
এদিকে আদালতে হাজিরা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ভাড়া বাস বরাদ্দ দিলেও গত রাত ১১টায় তা বাতিল করেন পরিবহন অফিসের দায়িত্বরত এক শিক্ষক। এতে করে আজ সকালে ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কমিউনিটি বাসে গাদাগাদি করে রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায় পৌঁছান তারা। পরে সেখান থেকে রিক্সায় করে আদালতে পৌঁছান শিক্ষার্থীরা।
দুই শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে পুলিশি হামলার জেরে উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় গত ২৭ মে ৩১ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা অন্তত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে প্রশাসন। ২৮ মে গ্রেফতার করা ৪২ শিক্ষার্থীকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত জেলহাজতে রাখার আবেদন করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। অপরদিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিম মোস্তাফিজুর রহমান সবার জামিন মঞ্জুর করে আজ (৪ জুলাই) শুনানির নতুন দিন ধার্য করেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা আইনজীবীর মাধ্যমে আজও জামিন আবেদন করবেন।
এছাড়া হাজিরা শেষে আদালতের সামনে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মে ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসচাপায় জাবির নাজমুল হাসান রানা ও মেহেদী হাসান আরাফাত নামের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে পরদিন ২৭ মে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ছুড়ে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। পরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। এসময় কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ উঠে। ওইদিন রাতে উপাচার্যের বাসভবনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেটে ৩১ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা অন্তত ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। মধ্যরাতে উপাচার্যের বাসভবন প্রাঙ্গণ থেকে ৪২ শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যায় আশুলিয়া পুলিশ। পরে প্রশাসনের মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।
Discussion about this post