একে.এম নাজিম, হাটহাজারী চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ হাটহাজারীতে যানযট নিরসনের উদ্যেগের ঘটনায় ব্যতিক্রম ধর্মী প্রতিবাদের প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে ভ’ক্তভোগী জন সাধারণের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রশাসনের পক্ষে আইনের শাসন প্রতিষ্টা করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, হাটহাজারী চট্টগ্রাম সহ সারাদেশে যানযট একটি মারাত্মক সমস্যা। নানা শ্রেণী পেশার মানুষ যানযটের জন্য যথাসময়ে গন্তব্যে স্থানে পৌছলে বিলম্ভ ঘটে। এতে কর্ম সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যাত্রীদের সীমাহীন ভাবে ভ’গান্তি পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও যথাসময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছাতে কষ্ট হয়। অনেক সময় যানযটের কারণে রোগীবাহী এমবুলেন্সকেও বিড়ম্বনার শিকারে পরিনত হতে হয়। এসব ঘটনাসহ যাত্রীদের নির্ভিঘেœ যাতায়তের সুবিধার্থে হাটহাজারী পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। দুই সংস্থার সভায় এ ব্যাপারে কঠোর সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সিন্ধান্তের আলোকে প্রথমে হাটহাজারী পৌরসভায় গত ৯ জুন থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ পরিচালনা করা শুরু হয়। এ অভিযানে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সরকারী সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন,সহকারী কমিশনার (ভ’মি) প্রসূণ কুমার চক্রবতী,সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী, আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ ও পৌরসভার সহায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দের উপস্থিতিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন পৌরসভার আদলে হাটহাজারী পৌরসভার যত্রতত্র সিএনজি ট্যাক্সি পাকিং বন্ধ করে নির্ধারিত স্থানে গাড়ী পাকিং করতে স্থান নিধারণ করে পৌরসভার আয় বৃদ্ধির জন্য পাকিং স্থান ইজারা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। গত মঙ্গলবার পৌরসভার সহায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দরা বাসস্টেশন এলাকায় সিএনজি ট্যাক্সি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে যানযট নিরসনের জন্য নির্ধারিত পাকিং রাখার ব্যবস্থা করেন। এসময় আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জনস্বার্থে এ কাজে সহায়তা করেন। মাইকে প্রচার করে সিএনজি ট্যাক্সি গুলোকে পৌরসভার কর্মচারী,ষ্ট্যান্ড ইজারাদারের লোকজন নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যায়।পরে বাস স্টেশন এলাকায় একটি রেষ্টুরেন্টের সামনে এলোপাতাড়ী দাড়িয়ে থাকা সিএনজি ট্যাক্সি গুলোকে সরাতে গেলে পৌরসভার কর্মকর্তা,সহায়ক কমিটির সদস্যবৃন্দ ও আইন শৃংঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সাথে উদশৃঙ্খলা সিএনজি চালকদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে উদশৃঙ্খল সি এনজি চালকেরা তাদেরকে আক্রমন করতে উদ্যত হয়। এ ঘটনায় ট্যাক্সি ষ্ট্যান্ড নির্ধারণকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থালে ছুটে আসে। নির্বাহী কর্মকর্তা সিএনজি চালকদের যানযট নিরসনের জন্য পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের সিন্ধান্তের কথা জানিয়ে নির্ধারিত স্থানে গাড়ী পাকিং করার কথা বললে উদশৃঙ্খল সিএনজি চালকেরা তার দিকে তেড়ে এসে নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে অশালিন কথাবার্তা বলতে থাকে। এসময় তিনি আত্মরক্ষার্থে উদশৃঙ্খল সিএনজি চালকদের লাঠি হাতে নিয়ে চারটি গাড়ীর আয়না ভাংচুর করে এবং কয়েকজন চালককে ভয় দেখায়। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন সিএনজি চালককেরা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। তারা অসহায়, এজন্য তাদেরকে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে জেলা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতা থাকলেও অসহায় চালকদের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদেরকে আইনে প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্য তিনি লাঠি হাতে তুলে নিয়ে তাদেরকে ভয় দেখিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শিক্ষা দিয়েছেন বলে জানান। অবশ্য এ ঘটনার জন্য তিনি অনুতপ্ত বলে উল্লেখ করে বলেন জনস্বার্থে যানযট নিরসনের জন্য এ কাজ করেছেন। বিষয়টিকে কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমে অতিরঞ্জিত ভাবে প্রকাশ করায় তিনি মর্মাহত হয়েছেন বলে ও মত প্রকাশ করেন। সারাদেশে জনস্বার্থে নির্ভিঘেœ পথ চলার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে। হাটহাজারীতে যানযট নিরসনের জন্য জন প্রতিনিধি পৌরসভার সহায়ক কমিটির সদস্যগণ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহতী উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে, তখন একটি মহল যানযট ও জন দূর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ সভায় আয়োজন করার জন্য মাইকে গত মঙ্গলবার বিকাল থেকে প্রচারণা চালাচ্ছে। বুধবার এ ঘটনায় প্রতিবাদ সভার কথা প্রচারণায় উল্লেখ করেছেন। এতে করে ভ’ক্তভোগী সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ হাটহাজারীসহ চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ যখন যানযটের যাতনায় অতিষ্ট তখন একটি স্বার্থান্মেষী মহল হাটহাজারীতে যানযট সৃষ্টিকারীদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে আয়োজনের প্রচারণা চালানো দুঃখ জনক বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন। অবশ্য বুধবারে যে প্রতিবাদ সমাবেশের কথা মাইকে প্রচারণা চালানো হয়েছে এই ধরণের কোন সমাবেশ বাস স্টেশন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে এ স্থানে হরতাল বিরোধী একটি সমাবেশ বেলা ১১ টায় অনুষ্ঠিত হয়। কোন স্বার্থান্মেষী মহল আইন অবমাননাকারী ও আইনে প্রতি অশ্রদ্ধাশীলদের পক্ষ নিয়ে কাজ করে তাহলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্টা করা অসম্ভব বলে মতপ্রকাশ করেছেন পর্যবেক্ষকমহল।
Discussion about this post