বাংলাদেশের কারাগারে থাকা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার (ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম) শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার সাজার দেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তাকে ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অনুপ চেটিয়ার ইচ্ছাতেই তাকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে এ সময় উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এর আগে সকালে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দেয়ার খবর প্রকাশ হয়। এ ব্যাপারে প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না।
মিরপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ রকম কোনো খবর তার কাছে নেই।’ পরে বেলা পৌনে একটার দিকে খবরে সত্যতা নিশ্চিত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিফিং করবেন।
ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুপ চেটিয়া এবং তার দুই সহযোগীকে ভারতে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি পরিষ্কার করেন।
এ সময় ভারতে ফেরত পাঠানোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে অনুপ চেটিয়ার রিটের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনুপ চেটিয়া সম্পূর্ণ সজ্ঞানে এবং নিজের আগ্রহেই ভারতে ফেরত যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
এর আগে ভারতের প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানায়, অনুপ চেটিয়াকে বুধবার সকালে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভির খবরেও একই কথা জানানো হয়।
প্রায় ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী ছিলেন উলফার এই শীর্ষ নেতা। ১৯৯৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে অনুপ চেটিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান এবং অবৈধভাবে বিদেশি মুদ্রা ও একটি স্যাটেলাইট ফোন রাখার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়। পরে তিনটি মামলায় তাঁকে যথাক্রমে তিন, চার ও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন বাংলাদেশের আদালত। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর সাজার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকেই দেশের বিভিন্ন কারাগারে ছিলেন তিনি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামকে ভারতীয় অধীনতা থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে গঠিত হয় উলফা। এরপর দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়ে আসছে সংগঠনটি।
Discussion about this post