গত ১৬ বছরেও নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের বিধান পালন করেনি বিচারক, পিপি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আইনের ৩১ (ক) ধারায় নারী নির্যাতন সংক্রান্ত মামলা ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি বিধানের কথা বলা হয়েছে। যদি ঐ বিধান প্রতিপালন করা না হয় তাহলে কেন ঐ সময়ের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি হলো না-তার ব্যাখ্যা দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু বিচারক. পিপি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৬ বছরেও এই ধরনের কোনো ব্যাখ্যা সুপ্রিম কোর্ট ও সরকারের নিকট দাখিল করেনি।
এ সংক্রান্ত এক মামলা শুনানিকালে আজ সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের ডিভিশন বেঞ্চ ৩১ (ক) ধারার নির্দেশনা পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে।
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মিলাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। ঘটনার দিনই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। ঐ বছরের শেষের দিকে মামলাটি চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ বিচারের জন্য যায়। চলতি বছরের ২১ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত।
অভিযোগ গঠনের পর সাত মাসেও কোন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আইনানুযায়ী মামলাটি ১৮০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হওয়ায় আসামির জামিন চেয়ে আবেদন করেন আইনজীবী কুমার দেবলু দে। গত ১ নভেম্বর ঐ জামিন আবেদনের শুনানিকালে আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। এরপরই আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান প্রতিপালন করা হয়েছে কিনা তা প্রতিবেদন আকারে অবহিত করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়।
ঐ নিদেশের পর আজ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইন মন্ত্রণালয়ে হাইকোর্ট প্রতিবেদন দাখিল করে। ঐ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট উপরিউক্ত আদেশ দেয়। একই সঙ্গে মিলাদ হোসেনের নামের ব্যক্তিকে জামিন না দিয়ে তার মামলাটি ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০’র ৩১(ক) ধারার প্রয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের প্রশ্ন- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৩১(ক) ধারার কোনো প্রয়োগ আছে কি না, এবং সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ অতীতে নিয়েছে কি না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আইন সচিব ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যাসহ একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
Discussion about this post