নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটে নৌকা প্রতীকের প্রচারণায় দীর্ঘ ১৭ বছর পর সিলেট যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান জানাবেন তিনি। সর্বশেষ তিনি অষ্টম সংসদ নির্বাচনের সময় ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জনসভায় বক্তব্য দেন।
শনিবার দুপুরে সিলেট সরকারি আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে বক্তব্য রাখবেন তিনি।
আজকের জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। জনসভা সামনে রেখে উজ্জীবিত চার জেলার আওয়ামী লীগ। নগরীর সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। মঞ্চ প্রস্তুত। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠ পরিদর্শন করেছেন। তবে এবারের মঞ্চ বরাবরের মতো বড় করা হচ্ছে না নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে। ৮০ ফুট মঞ্চের পরিকল্পনা হলেও পরে তা করা হয়েছে ২০ ফুটের। আচরণবিধির কারণে তৈরি করা হচ্ছে না কোনো তোরণও। জনসভার মাঠ ও মঞ্চের নিরাপত্তায় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। নজরদারিতে রাখা হয়েছে মাঠের আশপাশের আবাসিক বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের।
প্রশাসন ও দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টায় বিমানে সিলেট পৌঁছাবেন। বিকাল সাড়ে ৪টায় আবার বিমানেই ঢাকায় ফিরবেন তিনি। ৬ ঘণ্টার এ সফরে প্রধানমন্ত্রী সিলেট পৌঁছেই নগরীর তিন আউলিয়া হজরত শাহজালাল (রহ.), শাহপরান (রহ.) ও গাজী বোরহান উদ্দিন (রহ.)-এর মাজার জিয়ারত করবেন। পরে সিলেট সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্নভোজ ও নামাজ আদায় শেষে দুপুর আড়াইটায় মাদ্রাসা মাঠের জনসভা মঞ্চে যাবেন। ওই মঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা এবারের নির্বাচনে সিলেট বিভাগের নৌকা প্রতীকের কাণ্ডারীদের। জনসভা শেষে সিলেট ক্লাবে বিভাগের নৌকার প্রার্থী ও সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে শেখ হাসিনা মতবিনিময় করবেন বলে জানান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার সিলেট সফরে আসছেন সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী হিসেবে। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নেয়া হচ্ছে না।
দলীয় প্রধানের এই সফর সামনে রেখে শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের অগ্রবর্তী টিম সিলেটে পৌঁছে। তারা রাতেই জনসভাস্থল পরিদর্শন করেন। দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। সিলেটের ১৯ আসনের নৌকার প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে জনসভায় যোগ দেবেন। দলীয় সভানেত্রীর সফরকে স্বাগত জানিয়ে শুক্রবার নগরীতে মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংঠনের নেতাকর্মীরা। এর আগে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি সিলেট সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে সময় বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য পাবেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত ১৭ জন নৌকার প্রার্থী। জনগণের কাছে তাদের পরিচয় করিয়ে দেবেন তিনি। তাদের পক্ষে নৌকায় ভোট চাইবেন। যার কারণে উল্লসিত প্রার্থী ও সমর্থকরাও। এতে ভোটের মাঠে প্রার্থীদের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
১৭ প্রার্থী হলেন- মর্যদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনের (সদর-সিটি করপোরেশন) মহাজোট প্রার্থী ড. এ কে মোমেন, সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট) আসনের ইমরান আহমদ, সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদার ও সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনের প্রার্থী ও শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, সুনামগঞ্জ-১ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে জয়া সেনগুপ্ত, সুনামগঞ্জ-৩ আসনের এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের মুহিবুর রহমান মানিক, মৌলভীবাজার জেলার ৪টি আসনের মধ্যে মৌলভীবাজার-১ আসনের শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-২ আসনের এম এম শাহীন, মৌলভীবাজার-৩ আসনের নেছার আহমদ ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের প্রার্থী উপাধ্যক্ষ ড. মো. আবদুস শহীদ, হবিগঞ্জের ৪টি আসনের মধ্যে হবিগঞ্জ-১ আসনের শাহ নেওয়াজ মিলাদ গাজী, হবিগঞ্জ-২ আসনের মো. আবদুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ-৩ আসনের মো. আবু জাহির এবং হবিগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মাহবুব আলী। মহাজোটের অপর দুই প্রার্থী হলেন- সিলেট-২ আসনের মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির ইয়াহহিয়া চৌধুরী ও সুনামগঞ্জ-৪ আসনের মহাজোট প্রার্থী জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
এ/কে
Discussion about this post