জলদস্যু খোকাবাবু বাহিনীর সোমবার (২৮ নভেম্বর) আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনে দাপিয়ে বেড়ানো ৬টি জলদস্যু দলের ৪৮ সদস্য আত্মসমর্পণ করলো।
গত ৬ মাসে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যু বাহিনীর মধ্যে রয়েছে মাস্টার বাহিনী, মজনু ইলিয়াস বাহিনী এবং আলম শান্ত বাহিনী।
দস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বনদস্যুরা র্যাবের মাধ্যমে আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেয়। এ সময় জলদস্যুদের ব্যবহৃত ১১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৬ হাজার ৫২৮টি গুলি জমা দেয়া হয়।
সবশেষ সোমবার সকালে খোকাবাবু বাহিনীর প্রধান কবিরুল ইসলাম ওরফে খোকাবাবুসহ ১২ জলদস্যু ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৩টি গুলি জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বরিশাল র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর সুন্দর বনের আরেক জলদস্যু আলম শান্ত বাহিনীর ১৪ সদস্য ২০টি অস্ত্র ও ৫৯৬টি গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে।
এছাড়া ১৪ জুলাই মজনু-ইলিয়াস বাহিনীর ১১ সদস্য ২৫টি অস্ত্র ও ১ হাজার ২০ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
গত ৩১ মে সুন্দরবনের অন্যতম বাহিনী মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্য ৫২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৪ হাজার ৫০০ রাউন্ড গুলি জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে বাগেরহাটের মংলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
এদিকে সোমবার সকালে আত্মসমর্পণকারী জলদস্যু খোকাবাবু বাহিনীর ১২ সদস্যের নামে বাগেরহাটের মংলা থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়েছে।
বিকেলে র্যাব-৮ এর ডিএডি লিয়াকত আলী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। সোমবার বিকেলে বনদস্যুদের বরিশাল থেকে মংলায় আনা হয়। এ সময় র্যাব সদস্যরা ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র ১ হাজার তিন রাউন্ড গুলি মংলা থানায় হস্তান্তর করে।
সোমবার র্যাবের কাছে বনদস্যু খোকাবাবু বাহিনীর আত্মসমর্পণকালে জলদস্যুরা ৬টি বিদেশি একনলা বন্দুক, ৪টি বিদেশি দোনলা বন্দুক, একটি টুটু বোর বিদেশি এয়ার রাইফেল, ৬টি শাটারগান, ২টি এয়ারগান, ২টি শুটারগান এবং ১টি কাটারাইফেলসহ মোট ২২টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১ হাজার ০০৩ রাউন্ড গোলা বারুদ জমা দেয়।
মংলা থানায় অস্ত্র আইনে যাদের নামে মামলা করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন, আত্মসমর্পণকারী জলদস্যু প্রধান কবিরুল ইসলাম ওরফে খোকাবাবু (৩৩), আমিনুর ইসলাম (৩২), মো. শাহজাহান গাজী (৩০), মো. আবদুল আজিজ (৪৪), মো. মিজানুর রহমান (৩৬), মো. রবিউল ইসলাম (২৫), মো. ওসমান গনি (৩৩), মো. রফিকুল গাজী (৩৩), মো. ইয়াছিন আলি গাজী (২৫), মো. মহিদুল ইসলাম (৩৩), মো. মজিবর রহমান (৩৮) ও মো. কালাম (৩৫)। এদের সবারই বাড়ি বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
মংলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ লুৎফর রহমান জানান, অস্ত্র আইনে গ্রেফতার ১২ বনদস্যুর নামে মামলা হয়েছে। র্যাব-৮ এর ডিএডি লিয়াকত আলী বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করেছেন। আজ মঙ্গলবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
Discussion about this post