তানবীর চৌধুরী: এই সময় আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে সাভার রানা প্লাজার দূর্ঘটনা। দূর্ঘটনা লিখলেও অনেকেই এটাকে দূর্ঘটনা মানতে রাজি না। কারণ, দূর্ঘটনার আগের দিনই নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং, নোটিশ পেয়েও যারা( শ্রমিক) কাজে আসলো তারা দূর্ঘটনাটি মেনেই নিয়েই এসেছিল বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু এখানেও আবার প্রশ্ন, তারা কি ইচ্ছাকিত এসেছিল, নাকি তাদের বাধ্য করা হয়েছিল?
টেলিভিশনে শ্রমিকদের মুখ থেকে শুনে আমি যতটুকু জানতে পারলাম তা ঠিক এমন যে, “না আসলে বেতন আটকিয়ে রাখা হবে, বেতন দেওয়া হবে না ইত্যাদি বলে গার্মেন্টসে আসতে বাধ্য করা হয়েছে”। এখন তাদের কথাগুলোকে ভুল কিংবা মিথ্যা বলার মত দুঃসাহস আমার নাই। আসা করি আপনার ও নাই। এখন আপনি হয়তো বলবেন যে, রানা প্লাজার রানাকে তো গ্রেপ্তার করা হয়েছে, রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, ডিমথেরাপি ও বাদ যাচ্ছে না হয়তো, আর কি চান আপনি ?
আমি আসলে একটা কথা বলতে চাই, আর সেটা হল, রানা সহ বাকি আসামীদের কি শাস্তি হবে আমি জানি না, কোন আইনে শাস্তি হবে সেটাও জানি না। কিন্তু আমি চাই, আইনে যতটুকু শাস্তির কথা বলা আছে ততটুকুই দেওয়া হক, আমি আবেগ প্রবণ হয়ে বলতে চাই না, ফাঁসি চাই। তবে আইনে যদি ফাঁসির দণ্ড না থাকে তাহলে আমি চাই আমাদের সংবিধানের ৩৪ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করে শাস্তির পরিমাণটা বৃদ্ধি করা হোক। কেননা ৩৪ অনুচ্ছেদ সরাসরি বলে দিয়েছে যে,
“জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধকরণ
৩৪। (১) সকল প্রকার জবরদস্তি-শ্রম নিষিদ্ধ; এবং এই বিধান কোনভাবে লংঘিত হইলে তাহা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই সেই সকল বাধ্যতামূলক শ্রমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না, যেখানে
(ক) ফৌজদারী অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তি আইনতঃ দণ্ডভোগ করিতেছেন; অথবা
(খ) জনগণের উদ্দেশ্যসাধনকল্পে আইনের দ্বারা তাহা আবশ্যক হইতেছে”।
বেতনের ভয় দেখিয়ে আসতে বাধ্য করা আর জবরদস্তি-শ্রম আমার কাছে একই জিনিস বলে মনে হয়। যেহেতু, সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন; অতএব রানা সহ বাকিদের সংবিধান লংঘনের দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক।
শিক্ষার্থী, দ্বিতীয় বর্ষ, আইন বিভাগ, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়
Discussion about this post