মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। পেশায় একজন আইনজীবী। বর্তমানে ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য।
চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার তালতলি গ্রামে জন্ম এই তরুণ আইনজীবী নেতার। কৃষক বাবার চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন তিনি। গ্রাম থেকেই এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় আসেন উচ্চ শিক্ষা অর্জনের নিমিত্তে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন এবং আইডিয়াল ল’ কলেজ থেকে আইন বিষয়ে ২ বছরের পাস কোর্স করেন। এরপরই ঢাকা বারে যোগ দান করেন এবং এখন পর্যন্ত নিয়মিত প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন।
শিক্ষা জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও ঢাকা বার থেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে সব সময় সততা ও নিষ্ঠার সাথে একটু একটু করে এগিয়েছেন রাজনীতিতে। আর তারই ফলশ্রুতিতে ২০১৫-২০১৬ ঢাকা জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করে বিজয়ী হন।
‘আদালত অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার ফিরে পাওয়ার ঠিকানা’ কথাটির সাথে তিনি একমত কিনা জানতে চাইলে ল’ইয়ার্সক্লাববাংলাদেশ.কম’কে জানান, ‘না আমি একমত নই, আমি সম্পূর্নভাবে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দ্বিমত।’ কারণ হিসেবে তিনি বর্তমান জুডিশিয়ারি ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা এবং আইনজীবী, বিচারক, রাজনীতিবিদ ও পুলিশের দুর্নীতি কে দায়ী করেন। যতদিন এগুলো ঠিক না হচ্ছে ততদিন অধিকার বঞ্চিতরা বঞ্চিতই থেকে যাবে।
বিচার ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, আমাদের বেশীরভাগ উকিল সাহেবেরা নিজেরা তাদের দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে জানেন না, এমনকি আমাদের বিচারকরাও মাঝে মাঝে উনাদের কর্তব্য ভুলে যান। আমার এই কথাটি হয়ত অনেকে অন্যভাবে নিবে কিন্তু এটা সত্য এবং অস্বীকার করার উপায় নেই। আর আমাদের পুলিশ তো সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি পরায়ণ।
কেন এমন হচ্ছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের বিচার ব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নয়। রাজনৈতিক মোড়কে আমাদের বিচারকদের ক্ষমতা আবদ্ধ। আমি নাম বলব না, অনেক সময় সমনের জারি করা আসামি যার অপরাধ জামিন অযোগ্য জজ সাহেবেরা তাদের জামিন দিয়ে দেন আবার জামিনের যোগ্য আসামিদের জামিন দিচ্ছেন না। এখন আপনিই বলেন এমতাবস্থায় কি বলা যায় আদালত অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার ফিরে পাওয়ার ঠিকানা?
এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ কি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবার আগে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিতে হবে। যাতে করে বিচার ব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়, আইনজীবীদের সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার মানসিকতা পোষণ করে নিজেদের দায়িত্ব-কর্তব্যসমূহ সঠিকভাবে পালন করতে হবে। পুলিশকে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে।
সর্বোপরি এই তিনটি সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে স্বাধিনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তবেই আমাদের দেশের অধিকার বঞ্চিত মানুষেরা শুধু তাদের অধিকার ফিরে পাবে তা নয় বরং গোটা দেশই উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে বল তিনি মন্তব্য করেন।
কাজি ফয়েজুর রহমান ও মোঃ সাজেদুল হক
Discussion about this post