মিয়ানমারে বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠনের ডাক দেওয়া অস্ত্রবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সরকার। শনিবার ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য একতরফা অস্ত্রবিরতির ডাক দিয়েছিলো আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-এআরএসএ। তবে এক টুইটবার্তায় মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সুচির মুখপাত্র বলেছেন যে সরকার ‘সন্ত্রাসীদের’ সাথে কোন মধ্যস্থতা করবে না। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাদ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার থেকে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা একতরফা ভাবেই এক মাসের জন্য অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেয়। এক বিবৃতিতে বিদ্রোহীরা জানায়, তারা রাখাইনে মানবিক সংকট বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তারা আশা করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও সেখানে অস্ত্রবিরতি করবে।
আরসা বা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি শনিবার দেয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে অস্ত্রবিরতির এই ঘোষণা দেয়। গত ২৫ আগস্ট পুলিশের উপর এই আরসার চালানো হামলার প্রতিক্রিয়াতেই রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হয়, যার কারণে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।
সাম্প্রতিক ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের লক্ষ্যে সেনা অভিযান শুরুর কয়েকদিনের মাথায় ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গা’রা ২৪টি পুলিশ চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের সমন্বিত হামলায় অন্তত ১০৪ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়ে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযান জোরদার করে সরকার। এরপর থেকেই মিলতে থাকে বেসামরিক নিধনযজ্ঞের আলামত। পাহাড় বেয়ে ভেসে আসতে শুরু করে বিস্ফোরণ আর গুলির শব্দ। পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামগুলো থেকে আগুনের ধোঁয়া এসে মিশছে মৌসুমী বাতাসে। মায়ের কোল থেকে শিশুকে কেড়ে নিয়ে শূন্যে ছুড়ছেন সেনারা।
এরইমধ্যে বাংলাদেশে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা প্রবেশের কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। যারা বাংলাদেশে আসতে পারেননি, তাদের মানবিক সহায়তায় গতি আনতেই অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেওয়ার কথা জানিয়েছে এআরএসএ।
রাখাইনের সহিংসতা প্রসঙ্গে মিয়ানমারের সরকারের দাবি, রোহিঙ্গা জঙ্গি এবং মুসলমান গ্রামবাসীরা নিজেরাই নিজেদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে এবং অমুসলিমদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এদের অনেকেই সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে যাচ্ছে।
Discussion about this post