রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গুলিভর্তি পিস্তলসহ এক যাত্রীকে আটকের পর মামলা না দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা বিধান ত্রিপুরাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ।
ওই ঘটনার সময় বিধান ত্রিপুরা রাজধানীর উত্তরা জোনের ডিসি ছিলেন। বর্তমানে তিনি হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার।প্রসঙ্গত, অস্ত্রসহ যিনি ধরা পড়েন তার নাম আজমত রহমান। তিনি ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালক।এর আগে একই ঘটনায় বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আজম মিয়া ও উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত সাহাকে ভর্ৎসনা করেছিলেন হাইকোর্ট।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ বলেন, ‘আদালতে দুঃখ প্রকাশ করে বিমানবন্দর থানার ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। তারা বলেছেন,ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না। তখন হাইকোর্ট বলেছেন, বিমানবন্দর হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকা এবং স্পর্শকাতর জায়গা। ওখানে আপনি অস্ত্র নিয়ে যাবেন কেন? আরেকটা বিষয়, পুলিশ অস্ত্রের লাইসেন্স যাচাই না করেই আসামিকে তার বাবার জিম্মায় দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। অন্য কেউ হলে পুলিশ এভাবে ছেড়ে দিত কি?’
এ ঘটনার পর এসআই সুকান্ত সাহার বোন ফারমার্স ব্যাংকে চাকরি পান। এ ঘটনা উল্লেখ করে আদালত দুই পুলিশ কর্তকর্তাকে ভর্ৎসনা করে বলেন, ‘তাহলে কনসিকোয়েন্সটা কী দাঁড়াল? এ ঘটনার পরই আপনার বোনের চাকরি হয়েছে। তার মানে তাদের সঙ্গে আপনার (এসআই) এক ধরনের সেটেলমেন্ট হয়েছে। এরপর আদালত ওসির উদ্দেশে বলেন, ২০১২ সাল থেকে আমি ফৌজদারি আদালতে আছি। বিমানবন্দরে অল্প পরিমাণে সোনা ধরা পড়লেই আপনারা কয়েক দিনের মধ্যেই চার্জশিট দিয়ে ফেলেন। যখন ১০০-২০০ কেজি ধরা পড়ে তখন চার্জশিট দেন না। বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখেন।’
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এ বিষয়ে প্রকাশিত খবর আদালতের নজরে আনেন আইন কর্মকর্তা ফরহাদ আহমেদ।
আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারির পাশাপাশি বিমানবন্দর থানার ওসি ও এসআইকে তলব করেন। আজ তারা হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
ফরহাদ আহমেদ বলেন, ‘অস্ত্রসহ যিনি ধরা পড়েন তার নাম আজমত রহমান। তিনি ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালক। তার বাবা আতাহার উদ্দিন ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে যেকোনও নাগরিকের দায়িত্ব বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা আদালতের নজরে আনা।’
Discussion about this post