নজরুল ইসলাম (৪০)। গাড়ি চালাতে গিয়ে দুই বছর আগে বাঁ পা হারান। এক পা দিয়ে শুরু করেন গাড়ির ব্যবসা। গত মঙ্গলবার সকালে ডাকাতি মামলায় তাকে গ্রেফতার করে ওয়ারি থানা পুলিশ। ওইদিনই হাতে হাতকড়া লাগিয়ে তাকে আনা হয় ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের জিআর শাখায়।
দুই হাতে স্ট্রেচারে ভর দিয়ে কষ্ট করে হাঁটছিলেন নজরুল। এ সময় তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছিলেন, পঙ্গু মানুষের হাতে হাতকড়া লাগানোর কি দরকার ছিল? সে তো নিজেই চলতে ফিরতে পারে না। কীভাবে সে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালাবে?
নজরুলের সঙ্গে হলে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, দুই বছর আগে গাড়ি চলাতে গিয়ে বাম পা হারাই। এখন স্ট্রেচারে ভর দিয়ে হাঁটি। হাঁটতে খুব কষ্ট হয়। এরপরও পুলিশ হাতে হাতকড়া লাগিয়ে রেখেছে।
নজরুলকে ওয়ারি থানা থেকে নিয়ে আসেন ওই থানার এক কনস্টেবল। আসামির এক পা নেই, হাতকড়া পরানোর যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসামির পা নাই ঠিক আছে। সে ডাকাতি মামলার আসামি। যেন পালিয়ে যেতে না পারে এ কারণে হাতকড়া লাগানো হয়েছে।’
ঢাকা মহানগর হাকিম এইচএম তোয়াহর আদালতে হাজির করে ডাকাতি মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য নজরুলের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অনির্বান সরকার। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওয়ারি জিআর শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রকিবুল ইসলাম রিমান্ড নামঞ্জুরের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু গণমাধ্যমকে বলেন, আসামিকে হাতকড়া পরানোর নিয়ম আছে; তবে আদালতের মধ্যে নয়। অপরাধের ধরন ও গুরুত্ব অনুযায়ী হাতকড়া পরানোর বাধ্যবাধকতা আছে।
Discussion about this post