বনানীতে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় আসামি বাহাউদ্দিন ইভানের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার তার আইনজীবী ঢাকা মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সুব্রত ঘোষ শুভ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবির ইয়াসির আহসান চৌধুরীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ইভান। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিন চারদিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে হাজির করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা বনানী থানার উপ-পরিদর্শক সুলতানা আক্তার।
৭ জুলাই ইভানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ৬ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জ থেকে ইভানকে গ্রেফতার করে র্যা ব।
গত ৪ জুলাই রাতে জন্মদিনের দাওয়াত দিয়ে বনানীর বাসায় এক তরুণীকে ধর্ষণ করে ইভান। পরদিন ৫ জুলাই ভুক্তভোগী তরুণী ধর্ষণের অভিযোগ এনে বনানী থানায় ইভানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে ওই তরুণী উল্লেখ করেন, ১১ মাস আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইভানের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। এর সূত্র ধরে তারা দেখা-সাক্ষাৎ ও ঘোরাঘুরি করতেন। চার মাস আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ঘটনার দিন রাত ৯টায় ইভান ফোন করে ওই তরুণীকে জন্মদিনের কথা বলে তার বাসায় যেতে বলে।
এজাহারে তরুণী আরও উল্লেখ করেন, সম্পর্কের বিষয়টি তার (ইভান) মাকে জানাবে বলে জানায় এবং টেলিফোনে তার মায়ের পরিচয় দিয়ে একজন মহিলা আমার সঙ্গে কথা বলে আর আমি তাকে তার মা মনে করি। এরপর আমি আমার আপুর সঙ্গে কথা বলে রাত সাড়ে ১০টায় রিকশায় তার বাসার সামনে পৌঁছালে সে আমাকে রিসিভ করে বাসায় নিয়ে যায়।
বাসায় গিয়ে ওই তরুণী আর কাউকে দেখেননি। জানতে চাইলে ইভান জানান, তার বাবা-মা অসুস্থ। তাই ঘুমিয়ে আছেন। জোরে কথা বলা যাবে না।
এজাহারে বলা হয়, বাসায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কোনো আলামত দেখি না। আমি ভয় পাই এবং বাসায় ফিরতে চাই। কিন্তু সে বাসায় আসতে দেয় না। সে আমাকে রাতে খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ায়। আমি নিষেধ করলে সে একদিন খেলে কিছু হবে না বলে আশ্বস্ত করে।
এরপর রাত দেড়টায় ইভান তাকে ধর্ষণ করে বলে এজাহারে উল্লেখ করেন তরুণী। তিনি আরও বলেন, আমি চিৎকার করতে থাকলে সে রাত সাড়ে ৩টায় আমার ব্যাগ রেখে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
তরুণীর ভাষ্য, ব্যাগে তিনটা ড্রেস- দুটি জিন্স, একটা কুর্তা, তিনটি মোবাইল, চার্জার, সিম কার্ড, মেমোরি কার্ড ও নগদ ১৫ হাজার টাকা ছিল।
বাসা থেকে রাতে বের করে দেয়ার পর পথচারী এক ভদ্রলোকের সহায়তায় তিনি বাসায় ফেরেন বলেও উল্লেখ করেন বাদী।
এজাহারে তরুণী আরও বলেন, আসামি আমাকে এর আগেও বিবাহের প্রলোভনে ধর্ষণ করে। আমাকে ভয় দেখায়, মুখ খুললে তার কাছে থাকা ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে।
কিছুটা সুস্থ হয়ে এবং আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে এজাহার দিতে দেরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তরুণী।
Discussion about this post