আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ৯ ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও উপদেষ্টাদের টার্গেট করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সোমবার মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র সম্পদ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এক ঘোষণায় এমনটা জানায়। ঘোষণায় বলা হয়, সব মিলিয়ে নয় জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। এ খবর দিয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
খবরে বলা হয়, সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞায় ইরানের চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি, বিচার বিভাগের প্রধান ইব্রাহিম রায়িসি, দেশটির সর্বজ্যেষ্ঠ সামরিক সংস্থা জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেসের কর্মকর্তাদের টার্গেট করা হয়েছে।
ওয়াশিংটন অভিযোগ করেছে, জেনারেল স্টাফ অব দ্য আর্মড ফোর্সেস দেশটির রেভুলিউশনারি গার্ড কর্পসের সঙ্গে মিলে কাজ করে। প্রসঙ্গত, ইরানের রেভুলিউশনারি গার্ডকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে ওয়াশিংটন।
সোমবার এক বিবৃতিতে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মুচিন বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ হওয়া প্রত্যেক ব্যক্তি ইরান সরকারের অনিষ্টকর আচরণের সঙ্গে জড়িত।
এসব আচরণের মধ্যে রয়েছে, ১৯৮৩ সালে লেবাননের বেইরুটে মার্কিন ম্যারিন ব্যারাকের ওপর হামলা ও ১৯৯৪ সালে ‘আর্জেন্টাইন ইসরাইলিটে এসোসিয়েশন’র ওপর হামলা। এছাড়া বিচারবহির্ভূত হত্যা, বেসামরিকদের নিপীড়ন ও নির্যাতনের অভিযোগও আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, ইরান সরকার বারবার প্রমাণ করেছে যে, ক্ষমতায় আসার পর তাদের প্রথম পদক্ষেপগুলো অসাধু চরিত্রের ইঙ্গিত ছিল। তিনি ইরানে বন্দি থাকা মার্কিন নাগরিকদের মুক্ত করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে জুন মাসে খোমেনিসহ ইরানের একাধিক শীর্ষ নেতার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের ওই পদক্ষেপকে মূলত ‘প্রতীকী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সোমবার বলেছে, নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো খোমেনির ঘনিষ্ঠ চক্রের আর্থিক সম্পদগুলোকে টার্গেট করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া, একইদিন অবসরপ্রাপ্ত এফবিআই এজেন্ট রবার্ট লেভিনসনের সন্ধান সম্পর্কে তথ্যের জন্য ২ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০০৭ সালে ইরানে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন লেভিনসন।
এদিকে, রোববার তেহরানে মার্কিন দূতাবাস দখলের ৪০ বছরপূর্তি উদযাপন করা হয়। সেদিন খোমেনি জানান, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবে না ইরান। ইরানের কর্মকর্তাদেরও মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় না বসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছর ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্টকে বের করে নেন ট্রাম্প। এরপর থেকে ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে তার প্রশাসন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি চরম আকার ধারণ করেছে।
Discussion about this post