শর্তপূরণ না হওয়ার পরেও শিক্ষার্থীকে ভর্তি করায় ১০ বেসরকারি মেডিকেল কলেজের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে জরিমানা করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে বুধবার (১১ জানুয়ারি) এ রায় প্রকাশ করা হয়। রায়ের পর্যবেক্ষণে আপিল বিভাগ বলেছে, এমবিবিএস, বিডিএস কোর্সে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজগুলো ভঙ্গ করতে পারবে না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বেধে দেওয়া শর্তানুসারে মেডিকেল কলেজগুলোকে চলতে হবে। এমবিবিএস, বিডিএস কোর্সে গ্রাজুয়েশন সনদ দেওয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতা শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিবন্ধিত কলেজগুলোর নীতিমালা মেনে চলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু সেটি না মেনে ভর্তির ক্ষেত্রে মেডিকেল কলেজগুলো শর্ত লংঘন করেছে। মেডিকেলের মানসম্মত শিক্ষার জন্য আইন তৈরি করার ক্ষমতা সংসদের রয়েছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক কার্যক্রমে সংসদ হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ গত ২১ আগষ্ট এই রায় দেন। রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। লিখিত রায়টি ৩৭ পৃষ্ঠার। রায়ের পর্যবেক্ষনে বলা হয়, এটা প্রতিষ্ঠিত যে আদালত মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির পলিসি নির্ধারণে কোন হস্তক্ষেপ করতে পারে না। শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে কোন নীতিমালা ঠিক করে দিতে পারে না হাইকোর্ট। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করাটা আইনত হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি আইন লংঘন করে সেক্ষেত্রে যেকোন নাগরিক আইনের আশ্রয় নিতে পারে।
গত ২১ আগস্ট আপিল বিভাগ রায়ে ওই জরিমানার অর্ধেক টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং বাকি অর্ধেক টাকা কিডনি ও লিভার ফাউন্ডেশনকে দিতে নির্দেশ দেয়। এই দশ মেডিকেল কলেজ হলো, শমরিতা মেডিকেল কলেজ, সিটি মেডিকেল কলেজ, নাইটিঙ্গেল মেডিকেল কলেজ, জয়নুল হক শিকদার মেডিকেল কলেজ, এ আর মেডিকেল কলেজ, ইস্ট-ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ, তাইরুন নেছা মেডিকেল কলেজ, আইচি মেডিকেল কলেজ, কেয়ার মেডিকেল কলেজ ও আশিয়ান মেডিকেল কলেজ।
Discussion about this post