নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলার ঘটনায় জামায়াতে ইসলামীর লোক জড়িত দাবি করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন, এটা জামায়াত করেছে। দলটি বাংলাদেশের শত্রু, তাদের এদেশে থাকার কোনো অধিকার নেই। তিনি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ওপর হামলাকে নিন্দনীয় এবং ন্যক্কারজনক বলে উল্লেখ করে বলেন, দ্রুতই ঘটনার বিচার হবে।
আজ সোমবার (৫ মার্চ) সচিবালয়ে বিসিএস ইকোনোমিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যে জামায়াতের প্রসঙ্গ আসায় একজন সাংবাদিক তখন বলেন, ‘জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের একটি সিদ্ধান্ত আছে। আইন মন্ত্রণালয় এটির খসড়া করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমাও দিয়েছে। তাহলে সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে বিলম্ব করছে কেন?’
জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে প্রবলেম আছে। সবকিছু দেখেশুনে আগাতে হচ্ছে।’
গত শনিবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠান চলাকালে অতর্কিতে হামলায় ছুরিকাহত হন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। এ ঘটনায় মাদ্রাসাছাত্র ফয়জুর রহমানকে সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলে এবং পিটুনি দেয়। পরে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা তাঁকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।
হামলাকারী ফয়জুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার বাসিন্দা। তাঁর মূল বাড়ি সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের কলিয়ার কাপনপুরে। ঘটনার দিন রাতেই হামলাকারী ফয়জুর রহমানের বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তাঁর মামা সুনামগঞ্জ জেলা কৃষক লীগের বহিষ্কৃত নেতা ফজলুর রহমানকে আটক করা হয়। পরে তাঁর চাচা চাচা আবদুল কাহার (৫৫), বাবা মাওলানা আতিকুর রহমান ও মা মিনারা বেগমকে আটক করে পুলিশ। এই হামলা নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একে অপরের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে।
হামলাকারী ফয়জুরের মামা কৃষক লীগের নেতা, সেদিকে ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন তোলেন যে, এই হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত কি না?
আজকের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো জামায়াতের ভাষায় কথা হয়ে গেল। জামায়াত দেশের শত্রু। তাদের এক্ষুনি দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত।’
এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন জাফর ইকবালের ওপর হওয়া জঙ্গি হামলার ঘটনা এটা প্রমাণ করে কি না যে, দেশে জঙ্গিবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে?
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় জঙ্গিরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। জঙ্গিবাদ দমন হয়েছে। দু-একটি ঘটনা ঘটছে, জঙ্গিরা ধরাও পড়ছে, বিচারও হচ্ছে।’
জাফর ইকবালের ওপর হামলার ব্যাপারে গতকাল রবিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মন্তব্য করেন, ‘এই জঙ্গি হামলায় বিএনপির ইন্ধন আছে।’ তবে এই প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি অর্থমন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনের আগে অর্থমন্ত্রী বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডার এবং বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের একীভূত করার বিষয়ে গঠিত কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন।
Discussion about this post