নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকায় গোপন বৈঠক করার সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
বুধবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে কেবি আমান আলী রোডের বড় মিয়ার মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেসের ৪ নম্বর রুম থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের বেশ কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে যায়।
ওই রুমে তল্লাশি চালিয়ে ২টি মোবাইল সেট ও ১৩টি উগ্রবাদী জিহাদী বই উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতার দুজন হলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ছাত্র মো. নিজাম উদ্দিন (২৫) ও গার্মেন্টস কর্মী মো. রোকন উদ্দিন (২৪)।এদের মধ্যে নিজাম সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ফজল করিমের বাড়ির আহম্মদ কবিরের ছেলে। নগরীতে বড় মিয়ার মসজিদের ওই মেসে থাকতো সে। রোকন বাঁশখালীর বৈলগাঁও ইউনিয়নের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে। কালুরঘাটে মুনস্টার পেইন্টস ফ্যাক্টরি কলোনির একটি বাসায় ভাড়া থাকতো সে।
আনসারুল্লাহর দুই সদস্যকে গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানায় নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মূলত পরিকল্পনা ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতেই গোপনে বৈঠক করছিল আনসারুল্লাহর সদস্যরা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ২টি মোবাইল সেট ও ১৩টি উগ্রবাদী জিহাদী বইসহ হাতেনাতে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া ধর্মান্তরিত জঙ্গি মুসহাব ইবনে উমায়ের (সাবেক পিকলু দাশ) তাদেরকে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে প্রলুব্ধ করে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে অন্তর্ভুক্ত করেছে। উমায়েরের সাথে একাধিকবার গোপন বৈঠকও করেছে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ বলেন, নিজাম সাতকানিয়া সরকারি কলেজে ইন্টারমেডিয়েটে পড়ার সময় ছাত্রশিবির করতো। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর সে শিবির নিয়ন্ত্রিত শাহ আমানত হলে থাকতো। ওই সময়টাতে জাকির নায়েকের বই, ভাষণ, জসিম উদ্দিন রহমানের ওয়াজ শুনে সে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ হয়।
রোকন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। চান্দগাঁওয়ে একটি গার্মেন্টেসে কাজ করে সে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে সে খুবই অ্যাক্টিভ। ফেইসবুকের মাধ্যমেই সে জঙ্গিদের সাথে তথ্য আদান প্রদান ও যোগাযোগ রক্ষা করতো।
এ বিষয়ে বাকলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আনসারুল্লাহর অন্যান্য সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
এর আগে রোববার (২৮ আগস্ট) বিকেল সাড়ে তিনটায় বড় মিয়ার মসজিদ এলাকার বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকে থাকা পাঁচ-ছয়জন ব্যক্তি নিজামকে হাতকড়া পরিয়ে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তার ছোট ভাই আব্বাস উদ্দীন।
এ বিষয়ে বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও আইনি সহায়তাদানকারী সংস্থাগুলোর কাছে ভাইকে ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতিও জানান আব্বাস উদ্দিন।
Discussion about this post