নিয়ম না মেনে জাহাজ ভাঙলে দুই বছরের জেল ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে সংসদে একটি বিল উত্থাপিত হয়েছে। এই প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী জাহাজ ভাঙাশিল্পে আইনের লঙ্ঘনে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৩০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বিল-২০১৭ নামের এই বিলটি সোমবার (১০ জুলাই) সংসদে উত্থাপন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা বিলটি অনুমোদন দেয়।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণসম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। স্টিল মিলের কাঁচামালের চাহিদার সিংহভাগ এই শিল্প থেকে মেটানো হয়। এ শিল্পে কর্মরত শ্রমিক ও কর্মচারীদের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি, উপকূলীয় অঞ্চলের সামগ্রিক পরিবেশ সুসংহত করতে বিপদজনক বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাসহ এ শিল্পটি একটি আইনি কাঠামোর মধ্যদিয়ে পরিচালনা করতে এই বিলটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
বিলের ২১ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি সরকারের অনুমতি ছাড়া ইয়ার্ড স্থাপন করলে অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ড বা নূন্যতম ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একইভাবে বিলের ২২ ধরার বিধান অনুযায়ী, অনাপত্তি সনদ ছাড়া জাহাজ আমদানি এবং ছাড়পত্র ছাড়া জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করলে (ভাঙলে) দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড দেয়া যাবে।
বিলে আরও বলা হয়েছে, আইনের দ্বারা নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে কেউ শিপইয়ার্ড পরিচালনা করলে দুই বছরের কারাদণ্ড বা ১০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। আর জাল সনদ দিয়ে কোনো সুবিধা নিলে কমপক্ষে পাঁচ লাখ ও সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত আইনে, জাহাজ ভাঙার কার্যক্রম দেখাশোনা করতে এই আইনের অধীনে একটি বোর্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয় মনোনীত একজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যদার কর্মকর্তা এই বোর্ডের চেয়ারম্যান হবেন। এছাড়া এই বোর্ডে সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকবেন সরকারের নিয়োগকৃত একজন মহাপরিচালক। যিনি বোর্ডের প্রধান নির্বাহী হবেন।
উল্লেখ্য, বিলটি পাসের পর চট্টগ্রাম অঞ্চলের জাহাজভাঙা শিল্প এই আইনের আওতায় আসবে। জাহাজভাঙার জন্য একটি আলাদা জোনও করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে জাহাজভাঙার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান রক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন ও কনভেনশন প্রতিপালিত হবে।
Discussion about this post