প্রস্তাবিত ‘বিদ্যুৎ আইন-২০১৬’ উঠছে মন্ত্রিসভায়। সোমবার (০৮ আগস্ট) মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি উত্থাপিত হচ্ছে।
২০১০ সালের বিদ্যুৎ আইন রহিত করে বৃহৎ পরিসরে নতুন করে এ আইন করা হচ্ছে। এ আইনে চুরি কিংবা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর জেল-জরিমানা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া আইনে বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে সেরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি যৌথভাবে নিয়োগ, বিদ্যুৎ, আঞ্চলিক বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানি, ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ এবং বিদ্যুতের দাম নির্ধারণসহ বিভিন্ন বিষয় যোগ করা হচ্ছে নতুন এ আইনে।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, পুরনো আইনটি যুগোপযোগী ছিল না। সে কারণে আইনটি রহিত করে নতুন করে আইন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনটি মন্ত্রিসভায় উঠছে।
বর্তমানে সরকারের পাশপাশি বেসরকারি সংস্থাও বিদ্যুৎখাতে বিনিয়োগ করছে। এ বিষয়টি নজরে রেখেই নতুন আইন করা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট করা হচ্ছে বেসরকারি বিনিয়োগের প্রক্রিয়া।
১৯৯৬ সালে প্রণীত একটি নীতিমালা থাকলেও জাতীয় বিদ্যুৎ নীতি করার সুযোগ রাখা হয়েছে এ আইনে। বিদ্যুৎখাতে স্বচ্ছতা, গতিশীলতা আনাসহ উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে এ নীতিমালায়।
বর্তমানে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। এ সংস্থাগুলোকে নতুন এ আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালের নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে বেসরকারি অংশগ্রহণ সৃষ্টি করা হয়েছে।
ওই নীতিমালার আওতায় ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) থেকে বিদ্যুৎ কেনে পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (পিডিবি)। এর বাইরে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও বিদ্যুৎ কেনে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এসব বিষয়গুলো আনা হয়েছে নতুন আইনে।
এদিকে দেশে উৎপাদনের পাশাপাশি এখন ভারত থেকেও বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। তাই আঞ্চলিকভাবে বিদ্যুৎ আমদানি-রফতানির বিষয়ও যোগ করা হচ্ছে নতুন এ আইনে।
বর্তমানে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার কাজ করে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। এ ক্ষেত্রে পরস্পরের সহযোগিতার ভিত্তিতে সরকারি কেন্দ্র বন্ধ রেখে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার সুযোগ রয়েছে বর্তমানে। বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তৃতীয় পক্ষ হিসেবে একটি ইনডিপেনডেন্ট সিস্টেম অপারেটর তৈরির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে এ আইনে।
বিদ্যুৎ খাতে বিভিন্ন ধরনের চুরি ঠেকাতে এবং বিলখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে প্রস্তাবিত আইনে। বাড়ানো হচ্ছে শাস্তি। চুরির দায়ে বিদ্যমান আইনে এক থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। কৃত্রিমভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথব উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থেকে যন্ত্রাংশ চুরি করলে বা ক্ষতি সাধন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জেল এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন এ আইনে।
Discussion about this post