সরকারি নার্সদের আইন ও শৃঙ্খলা মেনে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। একই সঙ্গে চাকরির বিধি লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকারি হাসপাতালে নার্স নিয়োগ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা এনডিসি, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, সেবা পরিদফতরের পরিচালক নিলুফার ফরহাদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, তিন হাজার ৬০০ নার্স নিয়োগের আসন্ন পরীক্ষায় এবার এক হাজার নম্বরের লিখিত পরীক্ষা থাকছে না। এর পরিবর্তে ১০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি ও ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা হবে।
নাসিম বলেন, সরকারি হাসপাতালে নার্স সংকট সমাধান ত্বরান্বিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পাবলিক সার্ভিস কমিশন লিখিত পরীক্ষা না নিতে সম্মতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সদের প্রতি আন্তরিকভাবে সহানুভূতিশীল বলেই তাদের পদমর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, সরকার বেকার নার্সদের প্রতি সংবেদনশীল, তাই তিন হাজার ৬০০ নার্স নিয়োগ ত্বরান্বিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরো ১০ হাজার নার্সের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, যার মধ্যে বর্তমান অর্থবছরে সাত হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগ বিধি অনুযায়ী দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চাকরির নিয়োগ বিধির বাইরে যাওয়ার সুযোগ মন্ত্রণালয়ের নেই। দেশে নার্সিংয়ের মতো একটি মহান পেশার বিকাশ ঘটাতে সরকার আন্তরিক। এ লক্ষ্যে নার্সিং পরিদফতরকে অধিদফতরে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি।
আগামী ৫ বছরের অপারেশনাল প্ল্যানে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প
এর আগে সচিবালয়ে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের (সিএইচসিপি) এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, আগামী পাঁচ বছরের অপারেশনাল প্ল্যানে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গ্রাম পর্যায়ের সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গ্রামের ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ কার্যক্রমের সাফল্য সারা বিশ্বে উদাহরণ হিসাবে প্রশংসিত হয়েছে। আগামীতে এ প্রকল্প আরো জোরালোভাবে অব্যাহত রাখতে সরকার সচেষ্ট।
সিএইচসিপিদের উদ্দেশ্যে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, সিএইচসিপিদের চাকরি অব্যাহত থাকবে। তাদের নিষ্ঠা ও শ্রমের ফলে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম সাফল্য পেয়েছে। গ্রামের মানুষের চিকিৎসা ব্যাহত হতে পারে এমন পরিস্থিতি যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য সিএইচসিপিদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সিএইচসিপিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও সরকার সংবেদনশীল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের চাকরি জাতীয়করণের বিষয়টি সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে বিবেচনা করছে।
Discussion about this post