পেটেন্ট আইন ও পরমাণু শক্তি কমিশন আইনসহ পাঁচ আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে সোমবার। এদিন মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনগুলো উঠানো হবে।
সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন-২০১৬ খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হবে।
এছাড়া প্রস্তাবিত বিএসটিআই আইন-২০১৬, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আইন-২০১৬, বাংলাদেশ গম ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন-২০১৬ খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্যও মন্ত্রিসভায় উঠানো হবে।
অন্যদিকে, নীতিগত অনুমোদন পাওয়া বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ট্রাস্ট আইন-২০১৬ চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উঠছে মন্ত্রিসভায়। এর আগে গত বছর ২৩ নভেম্বর এ আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মেধাসম্পদ সংরক্ষণে বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন-২০১৬ প্রস্তুত করেছে সরকার। ১৯১১ সালের পুরাতন পেটেন্টস অ্যান্ড ডিজাইন অ্যাক্ট ভেঙে নতুন করে দু’টি আইন তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে পেটেন্ট আইন-২০১৬ এবং অপরটি ডিজাইন আইন-২০১৬।
মেধাসম্পদ সংরক্ষণে পেটেন্ট আইন
পেটেন্ট আইনের খসড়া চূড়ান্ত হলেও ডিজাইন আইনের খসড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রস্তাবিত পেটেন্ট আইনে মেধাসম্পদ সংরক্ষণের পাশাপাশি বাণিজ্যিকীকরণের নির্দেশনা রয়েছে। এ আইনে নতুন উদ্ভাবনকে স্বীকৃতি দিয়ের দেশের অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ করা হবে।
শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী পণ্য সত্ত্বাধিকার হারাতে বসেছে আগে থেকেই। ঢাকাই মসলিন ও জামদানির রয়েছে বিশ্বসেরা খ্যাতি। কিন্তু জামদানি শাড়ি এককভাবে ভারতীয় পণ্য হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক মেধাস্বত্ব প্রতিষ্ঠান বা ওয়াইপিওতে নকশিকাঁথার জিআই নিবন্ধনও পেয়েছে ভারত।
পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ফজলি, গোপালভোগ, হিমসাগর বা খিরসাপাত আমের আদি উৎপত্তিস্থল হিসেবে ভারত চিহ্নিত হচ্ছে। অথচ ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের আম অনেক বেশি সুস্বাদু।
নিজেদের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে এগুলোর সত্ত্ব দাবি না করার কারণে এমনটা ঘটেছে বলে মনে করে শিল্প মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের দাবি ভারত ১৯৯০ থেকে জিআই নিবন্ধন শুরু করে। ফলে তারা এরই মধ্যে ২১৮টি পণ্যের জিআই নিবন্ধন করেছে ভারত। এসব পণ্যের মধ্যে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০টি পণ্য বাংলাদেশে উৎপন্ন হয়। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশই মেধাস্বত্ত্বের দাবিদার।
মন্ত্রিসভায় পাঠানো প্রস্তাবিত এ আইনের সারসংক্ষেপে বলা হয়, বর্তমান সভ্যতা ও অর্থনীতির চালিকাশক্তি প্রযুক্তি। এর মূল ভিত্তি মেধাসম্পদ। মেধাসম্পদের মধ্যে রয়েছে- পেটেন্টস, ডিজাইনস, ট্রেডমার্কস ও কপিরাইট। বিশ্বে বস্তুগত সম্পদ সীমিত হলেও মেধা সম্পদ অফুরন্ত। এ মেধাসম্পদের চর্চা, মেধাসম্পদ সৃষ্টি, লালন এবং শিল্পের যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ ও সুদৃঢ় করে তুলতে পারে।
Discussion about this post