সাতক্ষীরা জজকোর্ট প্রতিনিধিঃ গত বৃহস্পতিবার (২জুলাই) বেলা একটার সময় সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির অফিস কক্ষে সমিতির সভাপতি জনাব এম,শাহ্ আলম এর সভাপতিত্বে কার্যকরী পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্য মোঃ আকবর আলী -র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
জনাব আকবর আলী ২০০৭ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে সনদ প্রাপ্ত পর সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ গ্রহণ করেন। ২০১০ সালে তৎকালীন বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ আদালতের একটি অর্ডারশীট ছিড়ে ফেলার অভিযোগ উঠলে,উক্ত বিষয়ে কার্যকরী পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় তিনি ভবিষ্যতে এ জাতীয় কর্মকান্ড করবেন না মর্মে মোচলেকা প্রদান করেন।তার এজাতীয় কর্মকান্ডের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয় এবং ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। কার্যকরী পরিষদের অনুরোধে সে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ তাকে মাফ করে দেন।
কিন্তু তার স্বভাবের কোন পরিবর্তন হয় নাই। তিনি ঐ একই বছরে সি/আর ৯৬২/১০ নং একটি মামলা দাখিলের সময় কৌশলে বাদীর অজ্ঞাতে ৮ নং ক্রমিকে জনৈক মিজানুর রহমানের নাম বসাইয়া দেন। উক্ত মিজানুর রহমানের আবেদনে বিষয় টি তদন্ত হয়।তদন্তে ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় তার সদস্য পদ বাতিলের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে প্রেরিত হয়।বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে কমপ্লেইন্ট কেস নং ৫/২০১২ হিসাবে তালিকা ভুক্ত হয় কিন্তু অদ্যাবধি উক্ত মামলার রেজাল্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয় নাই। দিনের পর দিন একের পর একটা অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে জনাব আকবর আলী। অতি সম্প্রতি তিনি জনৈকা শেফালী -র পক্ষে মামলা দাখিল করেন এবং পরবর্তীতে তিনি কোন প্রকার ওকালতনামা ছাড়া ঐ মামলার হাজতি আসামি ইমাম হোসেনের পক্ষে ভার্চূয়াল আদালতে জামিন শুনানি করেন এবং জামিন প্রাপ্ত আসামির জামিননামা সম্পাদন করেন।যাহা আইন পেশায় মারাত্মক পেশাগত অসদাচরণ হিসেবে দেখা হয়।
বিষয় টি বিজ্ঞ বিচারক নারীশিশু ট্রাইব্যাল (ভারপ্রাপ্ত) সাতক্ষীরার মাননীয় জেলা ওদায়রা জজ, জনাব শেখ মফিজুর রহমান সাহেবের কাছে ধরা পড়লে, তিনি জনাব আকবর আলী কে শোকজ করেন এবং জবাব দিতে বলেন। আকবর সাহেব বাদীপক্ষের স্বাক্ষর টি অস্বীকার করলেন কিন্ত শেষাংশে আবার বললেন ভুল হলে, ক্ষমা করবেন। অর্থাৎ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য প্রদান করলেন। বিজ্ঞ জেলা ওদায়রা জজ সাহেবের আদেশে আমি নিজেই বিষয়টি তদন্ত করি। আমার তদন্তে অভিযোগের সঠিকতা দেখা যায়। বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বাহাদুর ইতিমধ্যে আকবর আলী সাহেবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে অভিযোগ করেছেন। আজ বারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের মিটিং ছিল।
মিটিং এর শুরুতে জনাব আকবর আলী সাহেবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পাঠ করে শুনানো হয় এবং তার বক্তব্য গ্রহণ করা হয়।পরবর্তীতে অন্যান্য সদস্যদের মতামত নেওয়া হয়। ১১ সদস্যের কমিটির মধ্যে ১০ জন উপস্থিত ছিলেন। আকবর আলী সাহেব আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য প্রদান করেন। লাইব্রেরি বিষয়ক সম্পাদক জনাব সিরাজুল ইসলাম ৫ কোন মতামত দেন নাই। অবশিষ্ট সহসভাপতি জনাব গোলাম মোস্তফা, যুগ্ম সম্পাদক জনাব মোস্তফা জামান,ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জনাব সালাউদ্দিন ২, সদস্য, অপু,শাহেদ এবং রফিক সকলেই জনাব আকবর আলী সাহেবের বিরুদ্ধে বক্তব্য প্রদান করেন। সাধারণ সম্পাদক জনাব মোজাম্মেল হোসেন তোজাম সাহেব ও গঠন তান্ত্রিক বিধান অনুযায়ী শাস্তি দাবি করেন।
বক্তাগনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয় ১) তার কার্যক্রম কে পেশাগত অসদাচরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তার সদস্য পদ বাতিলের জন্য অভিযোগ কর হইবে। ২) বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে দুই টি অভিযোগ (জজ সাহেব এবং বার) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার অত্র সমিতির সদস্য পদ স্থগিত করা হইলো। এ সময়ে বারের কোন আসবাব পত্র কিম্বা অন্য কোন সুযোগ সুবিধা পাবেন না।
মো:জাকির হোসেন। সাতক্ষীরা জজকোর্ট প্রতিবদক। মোবা:01745704239
Discussion about this post