সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা প্রশ্নে করা রিট শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী কামাল হোসেন। বক্তব্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘তবে ষোড়শ সংশোধনীর ফলে সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যদের ভোটে একজন বিচারক অপসারণ করা যাবে। এই পরিস্থিতিতে একজন বিচারকের ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে বিচার কাজ করা কি সম্ভব?’</p> এর আগে তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বিচারকদের চাকরির মেয়াদকাল। তারা যেন ন্যায়বিচার করতে পারেন সেজন্য তার চাকরিকাল নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।</p> কামাল হোসেন বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অন্যতম অংশ। জাতীয় সংসদের হাতে বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে খর্ব করতে পারে। তাই এই সংশোধনী সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থি গণ্য করা যেতে পারে।</p> ১৯৭২ সালের যে সংবিধান প্রণয়নে যুক্ত ছিলেন কামাল হোসেন, তাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্ত ছিল। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়। পরে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের কাছে ন্যস্ত হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার তা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেয়।</p> কামাল হোসেন বলেন, বিচারপতিদের অপসারণে সংবিধানে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী মামলায় আপিল বিভাগের রায়ে তা বহাল থাকে। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের ওই রায় উপেক্ষা করে কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হল। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ৪০-৪২ বছরের অভিজ্ঞতা আমলে নিলে এত তড়িঘড়ি করে এই সংশোধনী আনা হতো না। বিচারক অপসারণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব ও দলীয় পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনা থাকায় এ বিষয়ক সংশোধনী নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।</p> প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন
Discussion about this post