ষোড়শ সংশোধনী বাতিলসংক্রান্ত আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মন্ত্রিসভায় এর কড়া সমালোচনা হয়েছে। তবে রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে শুরু করে এ মামলায় আদালতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে মতামত দেওয়া অনেকেই। একই সঙ্গে বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
বিচারপতিদের অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল ঘোষণা করে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলসংক্রান্ত আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয় ১ আগস্ট। রায়ে দেশের শাসনব্যবস্থা, জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে মন্ত্রিসভা। ৭ আগস্ট মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে প্রায় সব মন্ত্রীই ওই রায়ের সমালোচনা করেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও রায়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেওয়া পর্যবেক্ষণের কড়া সমালোচনা করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
অন্যদিকে রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে শুরু করে এ মামলায় আদালতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে মতামত দেওয়া অনেকেই। বিষয়টি নিয়ে সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সে বিষয়েও কথা বলেছেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবীরা। একই সঙ্গে বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
রায়ে কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে এ মামলার অ্যামিকাস কিউরি টিএইচ খান বলেন, ‘কারো কোনো বিষয়ে ভালো না লাগলে সেটা নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ হতেই পারেন। তবে বিচার বিভাগের সম্মান রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।’
অপর অ্যামিকাস কিউরি এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সুপ্রিমকোর্ট রায় দিয়েছেন। এটা সবার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। সরকারের কিছু বিষয়ে এখানে বলা হয়েছে। তা নিয়েই তারা (মন্ত্রিসভায়) ক্ষুব্ধ হয়েছেন।’
ষোড়শ সংশোধনীসংক্রান্ত শুনানিতে আদালতে মতামত উপস্থাপনকারী ১০ অ্যামিকাস কিউরির (আদালতের বন্ধু) মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি এর পক্ষে মত দেন। বাকি ৯ অ্যামিকাস কিউরি- ড. কামাল হোসেন, বিচারপতি টিএইচ খান, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, সিনিয়র আইনজীবী এম আই ফারুকী, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, প্রাক্তন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল ও এ জে মোহাম্মদ আলী সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বিপক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
Discussion about this post