বিচার বিভাগ বাংলাদেশে সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিচারের প্রক্রিয়ায় কারও কোনো ধরনের প্রভাব নেই বলেছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। পূর্ব লন্ডনের ডকল্যান্ডের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে আয়োজিত গত মঙ্গলবার এক ভোজসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতির সম্মানে ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিবিসিসিআই) এ ভোজসভার আয়োজন করে।<br /> বাংলাদেশে বিচারে দীর্ঘসূত্রতা ও ন্যায় বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা বিনিয়োগের জন্য একটি বড় বাধা এমন বিষয়টি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অতিথির বক্তব্যে উঠে আসে। তারা প্রবাসীদের সম্পত্তি দখল ও হয়রানিমূলক মামলার কথা উল্লেখ করে বিচার ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগ কামনা করেন।<br /> প্রধান বিচারপতি জবাবে বলেন, বাংলাদেশে বিচার বিভাগ স্বাধীন। এ ক্ষেত্রে লোকবল ও অবকাঠামোর সমস্যা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নিজে সাক্ষাৎ করেছেন জানিয়ে এস কে সিনহা বলেন, দ্রুত এসব সমস্যা সমাধান করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন।<br /> বিচার প্রক্রিয়ার উন্নয়নে পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, সাধারণ মানুষের অভিযোগ গ্রহণে ইতিমধ্যে একটি ‘অভিযোগ বক্স’ খোলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার বরাবর আইনি যেকোনো বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেবেন।<br /> প্রধান বিচারপতি আরো জানান, ১ নভেম্বর থেকে উচ্চ আদালতের সব কার্যক্রমের তথ্য অনলাইনে পাওয়া যাবে। এতে মামলার শুনানির তারিখ ও এর ফলাফল নিয়ে অতীতের মতো আইনজীবীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। পর্যায়ক্রমে পুরো বিচারিক কার্যক্রমকে ডিজিটাল করা হবে। ডিজিটাল হলে বিশ্বের যেকোনো স্থানে বসে মামলা করা, মামলার তথ্য জানা বা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্য প্রদান ও প্রমাণ হাজির করা যাবে।<br /> দুই বছরের মধ্যে সব মামলার জট সুরাহার উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলা মামলাগুলো সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সমঝোতার মাধ্যমে সুরাহা করতে চান তিনি। বলেন, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো এতে রাজি না হলে বিচারে হেরে যাওয়া পক্ষকে মামলার সমুদয় খরচ বহন করতে হবে।<br /> অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরে বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম এ হান্নান।<br /> বিবিসিসিআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল মুহিব চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলী, বিবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগির বখত ফারুক প্রমুখ।</p>
Discussion about this post