বয়স্ক নারীদের নিরাপত্তা ও ভরণ-পোষণ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী।
তিনি বলেন, বয়স্ক নারীরা ভরণ-পোষণ এবং যথাযথ যত্মের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সন্তানরা তাদের উপর ন্যাস্ত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে রোববার বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষকে সামনে রেখে ‘বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা পরিস্থিতি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফিরোজা পারভিনের সভাপতিত্বে নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বিগত দু’বছরে নারীর প্রতি সহিংসতা পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিতব্য গবেষণা প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি মন্ত্রী সভায় বিশেষ বিধান সম্বলিত (১৮ বছরের নিচে বিয়ে দেওয়ার সুযোগ রেখে) বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন অনুমোদন করায় এ সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করা হয়। এতে বিশেষ বিধানের অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। ফলে বাল্য বিয়ে বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আশা পোষণ করা হয়, জাতীয় সংসদ জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে বিশেষ বিধান বাতিল করে বহুল প্রত্যাশিত আইন পাশ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জনবহুল স্থানে রিশাকে হত্যা করা বা খাদিজা হত্যা চেষ্টা ঘটনায় উপস্থিত তরুণ-যুবদের নির্লিপ্ততা মানুষের চরম নিরাপত্তাহীনতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে । অন্যদিকে তথ্য-প্রযুক্তির দিক থেকে বাংলাদেশ এগুলেও এর নেতিবাচক ব্যবহারে নারীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশি। নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা নারীর অসর্তকতা কাজে লাগিয়ে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনব্যাপী তাকে হয়রানি করা হয়। ফলে নারীরা হয়রানি বা লোক লজ্জা থেকে রেহাই পেতে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করে সরকারকে এ খাতে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করা, মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, আইনের সাথে সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা, বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর ও আইনজীবীদের কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন করা, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ও সচেতনতা কার্যক্রমে পুরুষদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, আইনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, পরিবার থেকে শুরু করে কমিউনিটি ও জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা ইত্যাদি সুপারিশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে সমিতির পরিচালক-লিগ্যাল অ্যাডভোকেট তৌহিদা খন্দকার, প্রকল্প ব্যবস্থাপক অ্যাডভোকেট মিতালী জাহানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post