আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমারের কারাগারে বন্দি রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের সবশেষ আপিল আবেদনও নাকচ করে দিয়ে পূর্বের আদেশ বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার তাদের আইনজীবীর করা শেষবারের আপিলও নাকচ হয়ে যায়। এতে করে এখন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া সাঁজা থেকে মুক্ত হবার আর কোন রাস্তা খোলা নেই। মিয়ানমারের বহু পুরোনো সরকারি গোপন একটি আইন লঙ্ঘন করে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করার দায়ে রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লন (৩৩) ও কিয়াউ সোয়ি উ (২৯) কে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
সংবাদমাধ্যম এএফপির খবরে বলা হয়, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকেই রয়টার্সের এই দুই সাংবাদিককে বন্দি করে রাখা হয়েছে। শুরুতে দন্ডপ্রাপ্ত না হয়ে আইন ভাঙ্গার অভিযোগে আটক করে রাখা হয়। সম্প্রতি তাদের সাত বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর ব্যাপক নির্যাতন চলাকালে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করেছে তারা। সামরিক বাহিনীর ওই দমনপীড়নের কারণে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যায়।
গত জানুয়ারিতেও ইয়াঙ্গুন উচ্চ আদালত তাদের বিরুদ্ধে আগের আদালতের দেয়া অর্থাৎ গত সেপ্টেম্বরে দেয়া প্রাথমিক আদেশ বহাল রাখে। মিয়ানমারের বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় এখন এই দুই সাংবাদিক সর্বোচ্চ আদালতের দু’জনের বেশি বিচারকের কাছে ফের তারা আপিল আবেদন করতে পারেন। তবে তারা এই সুযোগ গ্রহণ করবে কিনা তা জানা যায়নি।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে ১০ রোহিঙ্গা মুসলমানকে নির্মভাবে হত্যার ঘটনার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী করে সাড়া জাগায় রয়টার্সের এই দুই সাংবাদিক। কিন্তু এরপরই মিয়ানমার সরকার তাদের আইনী মারপ্যাচে ফেলতে পুরোনো একটি সরকারি নথি বিষয়ক আইনের আশ্রয় নেয়। আর তা্ই ওয়া লন ও কিয়াউ সোয়ি উ কারাবন্দী দশা পার করছেন। তবে রোহিঙ্গাদের নির্মমভাবে হত্যা নিয়ে ওই প্রতিবেদনের জন্য তারা পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছেন। এই পুরষ্কারকে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে নোবেল পুরষ্কারের সাথে তুলনা করা হয়।
Discussion about this post