কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে শ্যালকের বিয়ে দিতে গিয়ে কারাগারে গেলেন দুই দুলাভাই। বাদ যাননি বর ও কনের বাবাও। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাঁদের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইবাদত হোসেন। তিনি বরের দুই দুলাভাইকে সাত দিন করে এবং বর ও কনের বাবাকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেন। পরে তাঁদের কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, সোমবার উপজেলার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই কিশোরীর সঙ্গে একই উপজেলার মুসা উদ্দিনের (২৫) বিয়ের আয়োজন করা হয়। দুপুরে বরাসহ বরযাত্রীরা কনের বাড়িতে পৌঁছান। চলে খাওয়াদাওয়া। তবে বিয়ে পড়ানো ও রেজিস্ট্রির কাজ বাকি ছিল। হঠাৎ করেই সেখানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসি রতন শেখ পুলিশ নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হন। পুরো বাড়িতে হইচই পড়ে যায়। অনেকেই পালানোর চেষ্টা করেন। তবে এর আগেই বিয়েবাড়ি ঘিরে ফেলেন পুলিশের সদস্যরা।
এ সময় সেখানে সদর উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন যান। পুলিশ বর মুসা উদ্দীন, তাঁর আপন দুই দুলাভাই ইবদার হোসেন ও রাশিদুল ইসলাম, বরের দাদা ওমর আলী ও কনের বাবাকে আটক করে। পরে তাঁদের ইউএনও ইবাদত হোসেনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও ইউএনও ইবাদত হোসেন বলেন, অন্যদের কারাদণ্ড দেওয়া হলেও বরের দাদা বয়স্ক হওয়ায় তাঁকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা রতন শেখ বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিয়েবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সবাইকে ডেকে বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে সচেতন করা হয়। পরে সবাই নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন। এরপরও আইন অমান্য করায় তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হয়।’
ওসি আরও জানান, বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পাওয়া মেয়েটি যাতে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করা হবে। এ নিয়ে গত তিন মাসে ১১টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হলো।
Discussion about this post