সরকারের সেবাধর্মী গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিরোধে নজরদারি বাড়াতে এবং দুর্নীতি অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১৪টি প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি অনুসন্ধান টিম গঠন করেছে।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কমিশনের নির্ধারিত বৈঠকে এ ১৪টি কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপ পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভাট্টাচার্য।
তিনি বলেন, সরকারি ১৪টি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি রোধে দুদক কমিটি গঠন করেছে। ১৪টি প্রতিষ্ঠান হলো, তিতাস গ্যাস, বাংলাদেশ রেলওয়ে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, গণপূর্ত অধিদফতর, সিভিল এভিয়েশন, বাংলাদেশ বিমান, কাস্টমস্ ভ্যাট এক্সারসাইজ, আয়কর অধিদফতর, বিআইডব্লিউটি এবং বিআইডব্লিউটিসি, বাংলাদেশ সড়ক ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ, মহাহিসাব নিরীক্ষক অফিস (এজি অফিস), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, ওয়াসা, ঢাকার সব সাব রেজিস্ট্রার অফিস।
তিনি আরো বলেন, বুধবার বিকেলে কমিশন এ ১৪টিম গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। একজন পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের পৃথক এ টিমগুলো তৈরি করা হয়েছে। এ টিমগুলো ১৪টি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং করবে। এছাড়া সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তা অনুসন্ধান করবে। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির প্রাথমিক তথ্যের প্রমাণ পেলে সেটি তদন্ত করে মামলাও করবে এ টিম।
এ বিষয়ে দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকরা সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া দুদকে এ বিষয় নিয়ে একটি অভিযোগ রয়েছে। এরই ভিত্তিতে কমিশন বুধবার দুর্নীতি রোধে ১৪টি টিম গঠন করেছে। এছাড়া দুদকের মহাপরিচালকের (বিশেষ তদন্ত) সার্বিক তত্ত্বাবধানে টিমগুলো পরিচালিত হবে। প্রতিটি টিমের নেতৃত্ব দেবেন একজন পরিচালক।
১৪ প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-নীতি, সেবাসহ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য খতিয়ে দেখবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির উৎস ও কারণ চিহ্নিত করা, দুর্নীতি বন্ধে কী কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে কীভাবে দুর্নীতিরোধ করা যায়, সে বিষয়েও সুপারিশ করবে এ টিম। এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ পাওয়া গেলে তবে তা অনুসন্ধানের অনুমতি, সুপারিশসহ কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে এ ১৪টি টিম।
এছাড়া টিমগুলোর কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, আদেশের কপি পাওয়ার পর টিমগুলো ওইসব প্রতিষ্ঠানের আইন, বিধি, পরিচালন পদ্ধতি, সরকারি অর্থ অপচয়ের দিকগুলো পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করবে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের সম্ভাব্য ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক, জনসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা, প্রতিবন্ধকতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি, দুর্নীতির কারণ ও দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে। এসব বিষয় উল্লেখ করে ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে টিমগুলোকে সুপারিশসহ সারসংক্ষেপ পেশ করতে বলা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, টিমগুলোকে দুর্নীতি, প্রতিবন্ধকতা সংশোধনের উপায় উদঘাটন করতে হবে। সারসংক্ষেপে প্রাতিষ্ঠানিক সেবার মান উন্নয়ন ও জনগণের ভোগান্তি, দুর্গতির বিষয় উল্লেখ করতে হবে।
Discussion about this post