নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের উন্নয়ন ও অর্জনে অনন্য সফলতার জন্য আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। এই সংবর্ধনাকে কেন্দ্র করে বড় শো-ডাউনের পরিকল্পনা করছে দলটি। ঢাকা ও আশ পাশের জেলাগুলো থেকে দলীয় লোক আনা হবে এ শো-ডাউনে। এছাড়া আওয়ামী লীগের বাইরে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এমন রাজনৈতিক নেতা, সমাজসেবক, সাংষ্কৃতিক কর্মী ও বুদ্ধিজীবীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এই আয়োজনে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের আশা, সব মিলিয়ে তিন লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ ঘটবে এ গণসংবর্ধনায়। নেতারা আরও আশা করেন এ শো-ডাউনের ঢেউ লাগবে সারাদেশে।
আজ শনিবার বিকাল ৪টায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের সোহরাওয়ার্দীতে আসতে শুরু করেছে।
ভারতের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি অর্জন, মহাকাশে সফলভাবে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পাঠানো, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন এবং বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করায় এ গণসংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণসংবর্ধণা অনুষ্ঠানকে সফল করতে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দফায় দফায় মিটিং করেছেন নেতারা। এছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ পৃথকভাবে মিটিং করে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে জনসমুদ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তারা ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন থেকে লোকজন আনার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকেও হাজার হাজার মানুষ যোগ দেবে এ অনুষ্ঠানে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গেছে, যে মঞ্চে সংবর্ধনা দেয়া হবে সেটা নির্মাণ করা হয়েছে ইংরেজি বর্ণ ‘এল’ আকৃতিতে। সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন করে। এই বিশাল মঞ্চের সামনে বসানো হয়েছে ত্রিশ হাজার চেয়ার। অনুষ্ঠান স্থলে দেশের বরেণ্য চিত্র শিল্পী হাশেম খানের তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬টি ছবি নিয়ে আয়োজন করা হবে চিত্র প্রদর্শনীর। এ প্রদর্শনীতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছবিসহ থাকবে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে লেখা বইসমূহ। এছাড়াও প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা বই দুটিও স্থান পাবে।
সংবর্ধনাস্থলের বাইরেও রাস্তাগুলো নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সংবর্ধনাস্থলে যে সড়ক দিয়ে আসবেন সে সড়কগুলোতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন ও অর্জনের ছবি সংবলিত পোস্টার-ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানো হয়েছে। পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আলোকসজ্জা করা হয়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের পদভারে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক উৎসবমূখর পরিবেশের সৃষ্টি হবে। মৎস্য ভবনের সামনে গণসংবর্ধনাস্থলের প্রবেশমুখে বিশাল একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কেমন লোক হবে তা সাংবাদিকদের ক্যামেরাই বলে দেবে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য গর্ব। তার নেতৃত্বে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। সে কারণে এ সংবর্ধনা কৃতজ্ঞ জাতির পক্ষ থেকে। আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী জাতির জনকের কন্যাকে সংবর্ধনা দিচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখবেন। মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং তার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। আনুষ্ঠানিকভাবে বিকেল ৩টা থেকে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংবলিত ত্রিশ মিনিটের একটি পরিবেশনা থাকবে।
তিনি বলেন, বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগের গণসংবর্ধনা শুরু হলেও দুপুর ১২টা থেকে লোকজন আসা শুরু করবে। দুপুর ১২টা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। দেশের বরেণ্য শিল্পীরা এতে সংগীত পরিবেশন করবেন।
এ সভায় আওয়ামী লীগের মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরা নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন ও অর্জনের চিত্র তুলে ধরে বক্তব্য রাখবেন। এ গণসংবর্ধনা আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে গণজোয়ারের বার্তা দেবে বলে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ আশা করেন। এছাড়া এ শো-ডাউনের ঢেউ দেশের অন্যান্য জেলাতেও লাগবে বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিশ্বাস।
Discussion about this post